করোনা সংকটে বন্ধ বিদ্যালয়ের জমিতে পাকা ভবন নির্মান

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : করোনা সংকটের কারনে ৩ মাস যাবত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ সুযোগে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নে বাগদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে নির্মান করা হচ্ছে পাকা ভবন। এমনকি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে থাকছেন দখলদার নজরুল ইসলাম। ভবন নির্মানের একদম শেষ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন লিখিত জানালে গত শনিবার থেকে নির্মান কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। নির্মান প্রায় শেষ হওয়া ভবনটি ভেঙ্গে জমি উদ্ধার হবে কি-না তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, করোনা সংকটের কারনে গত ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বিদ্যালয় ভবন লাগোয়া পাকা ভবন নির্মান করেছেন। তিনি ২১ মে (ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানার পরদিন) তারিখ বিদ্যালয়ে গেলে নির্মান কাজ দেখতে পান। বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে নজরুল পরিবার নিয়ে উঠেছেন। গত ৭ জুলাই বিষয়টি তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন। উপজেলা ভূমি অফিসের আমিন গিয়ে জমির মাপঝোপ করে দেবেন। এ পর্যন্ত ভবন নির্মান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


তবে দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে নজরুল ইসলাম বলেন, তার পিতাসহ মোট ৮ জনের দানের জামিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। তার পিতা দান করেছেন ৮ শতাংশ জমি। বিদ্যালয় দখলে নিয়েছে তার চেয়েও বেশী। তিনি তাদের বেহাত হওয়া জমির মধ্যে একবছর আগে ভবন নির্মান শুরু করেছেন। নজরুল ইসলামের দাবী, তার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় স্থানীয় একটি চক্র প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করে উর্ধ্বতন মহলে জমি দখলের দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ে কক্ষে পরিবার নিয়ে থাকা প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, ওই কক্ষটি পরিত্যক্ত। তিনি আগে ভাইয়ের বাড়িতে থাকতেন। ভাই জমি বিক্রি করে দেয়ায তিনি পরিত্যক্ত কক্ষে উঠেছেন।
নজরুল ইসলামের এ বক্তব্যের বিপরীতে প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নজরুল ইসলাম প্রায় বছর খানেক আগে থেকেই সেখানে ভবন নির্মানের পায়তারা করছেন। কয়েকটি ইটও গেঁথে ছিলেন। করোনা সংকটের কারনে বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে দিনরাত কাজ করে তিনি ভবন নির্মান প্রায় শেষ করেছেন। তিনি (প্রধান শিক্ষক) বিদ্যালয় থেকে অনেক দুরের গ্রামে বাস করায় বিষয়টি তার নজরে আসেনি। স্থানীয়রাও তাকে কিছু জানায়নি। ২১ মে নজরে আসার পরও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলো ৭ জুন- এর কারন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন, তাছাড়া তিনি জমির কাগজপত্র না বোঝায় ওই জমি বিদ্যালয়ের অংশ কি-না তা এখনও তিনি নিশ্চিত হতে পারেননি। আগের প্রধান শিক্ষকরাও বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে দিয়ে যায়নি। যে কারনে ভবন নির্মানের বিরুদ্ধে কখনও শক্ত অবস্থানে যেতে পারেননি তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম আহমেদ বলেন, প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সরকারি আমিনের মাধ্যমে জমি পরিমাপ করার উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক অভিযোগ জানাতে দীর্ঘ সময় নেয়ার সুযোগে ভবন নির্মান কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে, এ প্রসঙ্গে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, তার গাফেলতি থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *