নাগরিক রিপোর্ট: বরিশাল নগরীতে করোনার প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারনা করছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৮জন। এর মধ্যে নগরীতেই ৭৭১জন। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৭টি প্রাথমিকভাবে রেড জোনের আওতায় এনেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে এলাকাগুলো চিহিৃত করতে করোনীয় বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্স করেছে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটি। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নগরীর রুপাতলী, সাগরদিসহ কয়েকটি এলাকাকে চুড়ান্তভাবে রেড জোনের আওতায় এনে লকডাউন ঘোষনা হতে যাচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যের মাধ্যমে জানা গেছে, সিটি এলাকাসহ জেলার কয়েকটি উপজেলা লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই মধ্যে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত নোটিশ প্রেরেন করা হয়েছে। সুত্রমতে, ৬ জেলার মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার সব থেকে বেশি বরিশাল জেলায়। এ জেলার মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকা। যেকারনে সিটি এলাকা রেড জোন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী স্বাস্থ্য পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত বরিশাল নগরীসহ গোটা জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৮জন। জেলা ও মহানগরীতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩জনের। গত ২৪ ঘন্টায় একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বরিশাল জেলায়।
তিনি বলেন, করোনা আক্রান্তের সংখা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এ কারনে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকা লাল, হলুদ ও সবুজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই জোনিং তালিকা সংশ্লিস্ট স্থানীয় প্রশাসনকে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন লাল ও হলুদ জোনে করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। যে কোন সময় জোনিং তালিকা অনুযায়ী লকডাউন আসতে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল।
বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং এলাকাভিত্তিক রেড জোন ঘোষণা হতে পারে। এ সংক্রান্ত তালিকা সিটি কর্পোরেশনকে দেয়া হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
এব্যপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, মঙ্গলবার করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির সভায় নগরীর কোন কোন এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুকিপূর্ন তা যাচাই বাছাই করে চুড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নগরীর সাগরদি ও রুপাতলী এলাকার দিকে তারা অধিক নজর দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ নগরীর অধিকাংশ ওয়ার্ডকে ঝুকিপূর্ন চিহিৃত করলেও কৌশলগত কারনে তারা এলাকা ভিত্তিক রেড জোন ঘোষনা করবেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নগরীর কয়েকটি এলাকাকে রেড জোনে চিহিৃত করে কঠোর লকডাউন ঘোষনা দেয়া হতে যাচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
২০২০-০৬-১৭