নাগরিক রিপোর্ট : বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭টি রেড জোন ঘোষিত হলেও আপাতত ১২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড লকডাউন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল সিটি করপোরেনশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রশাসনের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেন। আগামী সোমবার থেকে দুই ওয়ার্ডে লকডাউন কার্যকর করা হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে ১২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা জানিয়েছেন, লকডাউন কার্যকর করতে তাদের প্রস্ততি নেই।
বিসিসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে- নগরীর রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলো লকডাউন বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশন করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা কমিটির সদস্যরা ভার্চুয়াল সভা করেছেন।
সভায় লকডাউন চলাকালীন স্বাস্থ্যসেবা ও জনসচেতনতা, নৌপথ ও সড়কপথে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রন, জনগণের কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেয়াসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় করনীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। প্রথম ধাপে নগরীর ১২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডকে পুরোপুরি লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য ওয়ার্ডগুলো লকডাউন করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কমিটির সভাপতি বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ওই সভায় যুক্ত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, ডিজিএফআই পরিচালক কর্ণেল জিএস মো. বাকের, শেখ হাসিনা সেনানিবাসের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্ণেল ফয়সাল আবেদীন হাসান, র্যাব-৮ এর কমান্ডিং অফিসার আতিকা ইসলাম, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) যুগ্ম পরিচালক অসিত বরন সরকার, বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস, সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন, শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বরিশাল শাখার জিএম স্বপন কুমার দাস এবং বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের যুগ্ম পরিচালক মো: আজমল হুদা মিঠু সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: জাকির হোসেন বলেনে, তিনি শুনেছেন তার ওয়ার্ড লকডাউন করা হবে। কিন্তু কবে-কিভাবে লকডাউন হবে, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তার এলাকায় ভোটার সাড়ে ৫ হাজার। মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের মত গুরুত্বপূর্ন দপ্তর তার ওয়ার্ডে। লকডাউনের আগে অবশ্যই সকলের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ওয়র্ডে ৮১জন করোনায় আক্রান্ত। স্বাস্থ্য বিভাগের উচিৎ ছিল আক্রান্তদের তালিকা প্রদান করা, যাতে সতর্ক বৃদ্ধি করা যায়। স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিস্টদের লকডাউন নিয়ে কতটুকো প্রস্তুতি আছে তা তার জানা নেই। এর বাস্তবায়ন হবে কি-না তা নিয়ে শংকিত এ কাউন্সিলর।
২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মো: আনিছুর রহমান বলেন, বিসিসি মেয়র বৃহস্পতিবার রাতে তিনিসহ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে লকডাউনের বিষয়ে কথা বলেছেন। সম্ভাবত আগামী সোমবার থেকে তার এলাকা লকডাউন হবে। এজন্য তারা স্থানীয়ভাবে বসে করনীয় বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিবেন। কাউন্সিলর জানান, তার ওয়ার্ডে ভোটার ১৭ হাজার। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৪২জন। লকডাউন কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, জনগন কি প্রস্তুতি নিবে এ বিষয়ে সিভিল সার্জন কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন দিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি। পুলিশ টাকা খেয়ে করোনা রোগীদের ছেড়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এ কাউন্সিলর। লকডাউন হলে জনগনকে খাবার পৌছে দেয়া, অসুস্থ্য হলে এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা এবং মানুষকে ঘরে ঘরে আটকে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন তিনি।
এসব ব্যাপারে জানতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মতিউর রহমানকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেনও ফোন রিসিভ করেননি।##
২০২০-০৬-২০