নাগরিক রিপোর্ট : পটুয়াখালীর বাউফলের নৌরুটে আলগী নদীতে ডবল ডেকার ঈগল ৪ লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবিতে আসলাম ও জান্নাত বেগম দম্পতি এবং আনোয়ার হোসেন নামে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় লঞ্চ মালিকপক্ষকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বিষয়টি আপোষ করেছেন স্থানীয় মাতব্বরেরা।
সোমবার নুরাইনপুর লঞ্চঘাটে রুদ্ধদার বৈঠকে স্থানীয় আব্দুস ছালাম, ব্যবসায়ী একেএম ফরিদ আহম্মেদ, চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু, লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার রব্বানী, লঞ্চমালিকের শ্যালক জাকির হোসেন এবং ঘাট ম্যানেজার বাবলু এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ১৮ জুন সকাল সাড়ে ছয়টায় ঢাকা থেকে কালাইয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ঈগল (৪) ডবল ডেকার লঞ্চে ওঠেন কেশবপুরের দম্পতি আসলাম ও জান্নাত বেগম এবং আনোয়ার নামের এক শ্রমিক। তারা সকালে আলগী নদীর নুরাইনপুর ঘাটে নেমে বাড়ির উদ্দেশে খেয়া নৌকায় ওঠেন। ওই নৌকায় ২০-২৫ জন যাত্রী ছিলেন। এ সময় ঘাটের পাশেই লঞ্চটির ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে গেলে অন্য যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠলেও আনোয়ার হোসেন ও ওই দম্পতি নিখোঁজ হন। কিছু সময় পরে আনোয়ার হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের একদল ডুবুরি এসে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দম্পতির সন্ধান করে পাননি। পরে শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে আলগী নদীর পাড়ে ভাসমান লাশ দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে স্বজনরা লাশ উদ্ধার ও শনাক্ত করেন। এ সময় স্থানীয় মাতব্বরদের চাপে নিহতর পরিবারকে আপোষ মিমাংসার লোভ দেখিয়ে মামলা থেকে বিরত রাখা হয় । এদিকে বাউফল থানা পুলিশ এ ঘটনায় অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের অনুমতি দেয়। এরপর সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বররা। বৈঠকে দম্পতির ছয় মাসের শিশু সন্তানকে ভরণপোষণ বাবদ ২ লাখ টাকা এবং আনোয়ার হোসেনের পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার রায়ে ঘটনা আপোষ-মিমাংসা করা হয়।
এ বিষয়ে ঈগল লঞ্চের মালিক আব্দুল জব্বার মিয়া বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে আপোষ-মিমাংসা করা হয়েছে।
ম্যানেজার রব্বানি বলেন, স্থানীয় ফরিদ আহম্মেদ ও চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
তবে ফরিদ আহম্মেদ দাবি করেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। লঞ্চমালিকদের সঙ্গে নিহদদের পরিবারের সদস্যরা আপোষ করেছেন।
বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি টাকা-পয়সা নিয়ে ঘটনাটি আপোষ-মিমাংসা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। নিহতদের পরবিারের কোন অভিযোগ না থাকায় মামলা নেয়নি পুলিশ।