নাগরিক রিপোর্ট: ব্যবসায়ীক বিরোধের জেরে একটি পরিবারের ওপর দফায় দফায় হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান সিকদারের বিরুদ্ধে। ভূক্তভোগী পরিবারটি শুক্রবার দুপুরে বরিশাল রিপোটার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদিক সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন। তবে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাসান সিকদার দাবী করেছেন, ব্যবসায়ীক বিরোধের জের ধরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
পটুয়াখালী পৌর শহরের বাসিন্দা অবরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মো. ফজলুল হক খান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, তার ছেলে ব্যবসায়ী শামীম খানসহ গোটা পরিবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান সিকদারের রোষানালে পড়েছেন। একের পর এক হামলা ও মিথ্যা মামলায় তারা এখন দিশেহারা। কোথায়ও ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না।
ফজলুল হক খান বলেন, ছাত্রলীগ নেতা হাসান সিকদার বাড়ি করার জন্য তার ছেলে শামীম খানের বালু-সিমেন্টের দোকান থেকে ১০ লাখ টাকার মালামাল বাকি নিয়েছে। ওই টাকা চাইতে গেলে শামীমকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এনিয়ে হাসান সিকদারের সঙ্গে তাদের বিরোধের সুত্রপাত।
এর জের ধরে গত ২৯ জানুয়ারী রাত সাড়ে ১০টায় হাসান সিকদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বসত বাড়িতে ঢুকে মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ৯ ভরি স্বর্ণলংকার, দুটি বøাংক চেক ও নগদ ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করতে গেলে পটুয়াখালী সদর থানা ওসি আখতার মোর্শেদ নানা টালবাহানা করে কয়েকমাস পর ডাকাতির ধারা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বøাংক চেক উদ্ধারের মামলা গ্রহন করেন।
ফজলুল হক খানের অভিযোগ, গত ৫ ফেব্রয়ারী শামীম খানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পটুয়াখালী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে জোর করে দুটি দলিলে স্বাক্ষর নেন হাসান সিকদার। ১০ ফেব্রæয়ারী শামীম খানকে মারধর করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়ে সেটি দখল করেন। এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে হাসান সিকদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশী আবেদন করেছেন শামীম খান। আদালত হাসান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৩৯৫ ধারায় ডাকাতি মামলা গ্রহন করে ৫ দিনের মধ্যে আদালতে অবহিত করার জন্য পটুয়াখালী সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি হাসান সিকদার বলেন, শামীম খানের সঙ্গে ২০১৬ সাল থেকে তার একাধিক ব্যবসা ছিল। মুলধন ফেরত চাওয়ার পর থেকেই শামীম খান ও তার বাবা ফজলুল হক ষড়যন্ত্র শুরু করেন। হাসান সিকদার অভিযোগ করেন, গত জানুয়ারী মাসে শামীম খান তাকে ৫১ লাখ টাকার চেক (অগ্রনী ব্যাংক, পটুয়াখালী নিউ মার্কেট শাখা) দিলেও সেটি ডিজঅনার হয়। এরপর থেকে শামীম খান ও তার বাবা গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ নানা অপপ্রচার শুরু করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে করা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে হাসান সিকদার বলেন, পাওনা টাকা না দেয়ার কৌশল হিসাবে এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এবিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোর্শেদ জানান, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাসান শিকদারের বিরুদ্ধে শামীম খান বাদী হয়ে যে ডাকাতি মামলা দায়ের করেছেন তা বর্তমানে তদন্তাধীন আছে। তাই এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে চাননা তিনি।