সৈয়দ জুয়েল: ছোট বা মাঝারি বৃস্টিতেই ডুবে যায় ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রাস্তা ঘাট। ব্যাস্ততম সড়ক গুলোর গাড়ী গুলোকে তখন মনে হয় নদীর ভিতর গড়ে ওঠা অবৈধ কোন স্থাপনা। মাঝে মাঝে অবৈধ স্থাপনা যেমন সরকার বুলডোজার দিয়ে মিলিয়ে দেয়, তেমনি সড়কে জমে থাকা পানির তলদেশের গর্তে পরে যানবাহনের একাংশ দেখাও অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে সাধারনের। দূর্বল পয়ঃনিস্কাশন ব্যাবস্থা, পরিকল্পনাহীন নগরায়ন, যত্র তত্র শিল্প কারখানা স্থাপন, সাথে নাগরিকদের সচেতনাতাবোধের অভাবে ঢাকা আজ বসবাসের অযোগ্য নগরীর শীর্ষে।
প্রতিদিন শুধু ঢাকায় ৬০ কোটি লিটার বর্জ্য জল উৎপন্ন হয়, এর ভিতর ৭৫ শতাংশেরও বেশি অপরিশোধিত অবস্থায় নদী খালে চলে যায়। এতে করে ঢাকার আশেপাশের নদীগুলোর পানি নস্ট হয়ে নাব্যতাও হারিয়েছে বহু আগে। এর উপর নদী দখল করে বাড়ী ঘর,শিল্প কারখানা তৈরীতে ছোট হয়ে গেছে নদীও।
পৃথিবীর অস্টম বৃহত জনগোসষ্ঠীর বাংলাদেশে জনসংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে কখনো তৈরী হয়নি একটি নিরাপদ স্যুয়োরেজ ব্যাবস্থা। যার কুফল ভোগ করছেন আপামর জনতা। সরকার আসে,সরকার যায় কিন্তু একটু পানিতেই তলিয়ে যাওয়া ঢাকাকে পূর্নগঠনের কাজ আর হয়না। ভোটের মাঠে নেতাদের জ্বালাময়ী বক্তৃতায় মাঠ কাঁপলেও কাঁপেনা এ সব স্যুয়োরজের লাইন। মান্ধাতা আমলের লক্কর ঝক্কর ড্রেনের লাইনগুলোর উপর অবৈধ দোকানের সাঁড়িতেও বন্ধ হয়ে আছে অনেক লাইন। দেখার যেন কেউ নেই। আজ এ বসবাসের অযোগ্য নগরী গঠনে প্রতিটি সরকারই সমান দায়ী যেমন,তেমনি এখানের নাগরিকরাও এর দায় এড়াতে পারেনা। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা না ফেলে নিজের দায়িত্বটুকু পালন না করে শুধু সরকারের সমালোচনা করেই- নিজের দায়িত্ব পালনের বীরত্ব নিয়মিত। জনগন দ্বারাই সরকার গঠন। যে দেশের জনগন যত সচেতন,সে দেশ তত উন্নত।
আধুনিক বিশ্বে দূর্বল এই সড়ক,ড্রেনেজ ব্যাবস্থা জাতির জন্য লজ্জার। প্রতিদিনই জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে ব্যাস্ততম নগরী গুলোতে। জনসংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে যদি এই অবকাঠামোর আধুনিকায়নে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যাবহার না করা হয়,তাহলে শুধু ঢাকা নয়,বাংলাদেশের অনেক বড় শহরই বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে দ্রুতই। জরাজীর্ণ এ ব্যাবস্থা কাটাতে যোগ্যতা সম্পন্ন ও দূর্নীতি মুক্ত কিছু আলোকিত মানুষ দরকার এ শহরগুলোর পূর্নগঠনে। না হলে সরকারের বৃহত সফলতাগুলো ঢেকে যাবে ঢাকার তলিয়ে যাওয়া সড়কগুলোর মত।