৫ দশক পর মোল্লা বাড়ি ফিরে যাবেন

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)র সর্বস্তরের প্রিয়মুখ ঝালমুড়িওয়ালা মোল্লা এবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। টানা পাঁচ দশকের ঝলমলে সময়ের স্মৃতি ফেলে রেখে তিনি ফিরে যাবেন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মনোহারগঞ্জ থানার মির্জাপুরে। বাকি জীবনটা সেখানেই কাটাতে চান ঝালমুড়ি বিক্রেতা মো. আব্দুল মান্নান।

তার বিদায়কে ঘিরে একদল তরুণ সাংবাদিক আয়োজন করেছে ‘মোল্লা যাবে বাড়ি’ স্লোগান নিয়ে ৩ দিনব্যাপী মুড়ি উৎসব। শনিবার বিকেল ৩টা থেকে এই উৎসব শুরু হয়েছে। চলবে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত। এই আয়োজনের পেছনে কাজ করছেন মাজহার বাবু, আহম্মেদ তেপান্তর, রাহাত সাইফুল, এ এইচ মুরাদ, আসিফ আলম, রঞ্জু সরকার, রুহুল আমিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

জানা গেছে, উৎসবে আগত শিল্পী ও কলাকুশলীরা মোল্লাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। এখান থেকে যে টাকা আসবে তা নিয়েই হাসিমুখে গ্রামে ফিরে যাবেন মোল্লা।
উৎসবের অন্যতম আয়োজক সাংবাদিক এ এইচ মুরাদ বলেন, ‘এটা একদিকে মানবিক বিষয়। অন্যদিকে মানুষটাকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানানো। দুটো বিষয় এক করেই আমরা উৎসবের পরিকল্পনাটি করেছি।’
উৎসবের আরেক আয়োজক এবং বাচসাস’র সাংগঠনিক সম্পাদক রাহাত সাইফুল বলেন, ‘ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে মোল্লা ভাইকে বাড়ি পাঠাতে চাই আমরা। তিনি শেষ বয়সে এফডিসি থেকে কষ্ট নিয়ে যাবেন, তা তো হয় না। প্রথম দিনে দারুণ সাড়া পেয়েছি আমরা। আশা করি, সামনের দু’দিন শিল্পী-কুশলীরা শেষবারের মতো মোল্লার মুড়ি খেতে আসবেন। আর বাড়িয়ে দেবেন সাহায্য ও ভালোবাসার হাত।’

উৎসবের আয়োজক সাংবাদিকদের সঙ্গে মুড়ি বিক্রেতা মান্নান

এফডিসির সুপরিচিত ঝালমুড়ি বিক্রেতার মো. আব্দুল মান্নান তিন ছেলে ও তিন মেয়ের জনক। ছেলে-মেয়েরা নিজেদের সংসার নিয়ে আলাদা। ছোট ছেলে এখনো পড়াশুনা করছে।

মোল্লার হাতের ঝালমুড়ি খেয়েছেন নায়করাজ রাজ্জাক, শাবানা, আলমগীর, সালমান শাহ, মান্না, রিয়াজ, শাবনূর, ওমরসানী, মৌসুমী, ফেরদৌস, পপি, ডিপজল থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের প্রায় সকল চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলী।

মোল্লার ভাষ্যে, ‘১৯৭২ সাল থেকে আমি এখানে ঝালমুড়ি বিক্রি করি। দেশের এমন কোনো তারকা নেই যে আমার মুড়ি খাননি। পাশাপাশি এফডিসির মসজিদে ইমাম হিসেবেও কাজ করেছি। এখন বয়স হয়েছে। ঠিকমতো কাজ করতে পারি না। ঝালমুড়ি বিক্রি করে যে টাকা পাই, তা দিয়ে ভাতের পয়সাও হয় না। তাই গ্রামে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে গিয়ে দোকান করার চিন্তা করছি। এজন্য টাকার প্রয়োজন। আমার বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে ছেলেরা এই আয়োজন করেছে। সবাই আমাকে সহযোগিতা করছে। এটাই আমার জীবনের অনেক বড় আনন্দ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *