বাংলাদেশের লিড ২১৮

Spread the love

স্পোর্টস ডেস্ক:
মাত্র ছয় রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৯ রানেই গুটিয়ে দিয়ে ১৭১ রানের লিড পেলেও স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে বসেছেন স্বাগতিকরা। প্রথম দুই উইকেটই তুলে নিয়েছেন রাহকিম কর্ণওয়াল। দুই বলের ব্যবধানে দুজন ডাক মেরেছেন। তামিম ৪ বল খেলে এলবিডাব্লিউ হন, আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্তে রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি তিনি। আর শান্ত দুই বল খেলে জার্মেইন ব্ল্যাকউডের ক্যাচ হন স্লিপে।

এরপর ক্রিজে থাকা সাদমানকে সঙ্গে নিয়ে খেলতে থাকেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। এক প্রান্তে সাবলীল ব্যাটিংয়ে খেলছিলেন দারুণভাবে। এর মাঝে গ্যাব্রিয়েলের বলে ক্যাচ তুলে ৪২ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন সাদমান। ভেঙে যায় ৩২ রানের জুটি। হাল ছাড়েননি মুমিনুল। এবার মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেই মাঠ ছাড়েন টাইগার অধিনায়ক। মুমিনুল ৪৯ বলে ৩১ ও মুশফিক ২৩ বলে ১০ রান করে অপরাজতি আছেন। দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ তিন উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান। বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ২১৮ রানে।

বাংলাদেশের ৪৩০ রানের জবাব দিতে নেমে ৫ উইকেটে আড়াইশ পেরিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। সেখান থেকে ২৫৯ রানেই অলআউট ক্যারিবিয়ানরা! দেড়শ পেরুতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে ডেকে আনা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন জের্মেইন ব্লাকউড ও জেসুয়া ডি সিলভা। ষষ্ঠ উইকেটে ৯৯ রান তোলেন দুজন। চা বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে এই দুজনকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান। মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে ১৪৬ বলে ৬৮ রান করেছেন ব্লাকউড। ডি সিলভা ১৪১ বলে ৪২ রান করে আউট হলে চা বিরতি দেয় আম্পায়ারা। চার বিরতির পর ১৯ বলের ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি তিন উইকটে তুলে নেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। যাতে ১৭১ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজ ৫৮ রানে ৪টি ও তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান এবং মোস্তাফিজুর রহমান দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে দিনের প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যান এনক্রুমাহ বোনারকে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানান তাইজুল ইসলাম। ১৭ রানে আউট হন বোনার।

অপ্রতিরোধ্য ব্যাটসম্যান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ফিরিয়ে দিলেন বাংলাদেশের স্পিনার নাঈম হাসান। নিজের সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ককে বোল্ড করেন তিনি। ৮৬ বলে ফিফটি করার পর উইন্ডিজ ওপেনার থেমেছেন ৭৬ রানে। ১১১ বলে ১২টি চারে এই রান করেন ব্র্যাথওয়েট। হাফ সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন কাইল মেয়ার্স। কিন্তু তাকে ১০ রানের আক্ষেপে পোড়ালেন মিরাজ। এই ডানহাতি স্পিনারের কাছে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৬৫ বলে ৭ চারে ৬৪ রান করেন। জার্মেইন ব্ল্যাকউডের সঙ্গে তার জুটি ছিল ২৪ রানের।

এর আগে বাংলাদেশের ৪৩০ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৪ রান না হতেই দুই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুটি উইকেটই তুলে নেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর খেলার হাল ধরেন ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও চারে নামা এনক্রুমা বোনার। দুজনের তৃতীয় উইকেটের জুটি থেকে আসে ৫১ রান। ৬৪ টেস্ট খেলা অভিজ্ঞ ব্র্যাথওয়েট ক্যারিয়ারের ২০তম হাফ সেঞ্চুরির পথে। তার ব্যাট থেকে আসে ৮১ বলে ৪৯। বোনারের রান বেশি না হলেও তিনি খেলছেন টেস্ট মেজাজে। ১৭ রান করতে তিনি খেলেন ৫৮ বল। ২৯ ওভারের খেলা শেষ হতেই দ্বিতীয় দিনের খেলা সমাপ্তির ঘোষণা দেন আম্পায়ার।

প্রত্যাবর্তন টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি পান সাকিব আল হাসান। বেশ ঝলমলে ছিল সাকিবের সকালটা। তবে সাকিবের রং ছড়ানো ব্যাটিং স্থায়ী হয়নি লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত। কিছুটা আফসোস থেকেই গেল। ক্রিজে সেট হয়েছিলেন, প্রত্যাশাও বাড়িয়েছিলেন, সাকিবের কাছে চাওয়াটাও ছিল আরো বেশি। কিন্তু পারলেন না প্রত্যাবর্তন টেস্টে হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরি বানাতে। রাকিম কর্নওয়াল সাকিবকে শিকার করেন। লাফিয়ে উঠা বলকে কাট করতে গিয়ে উইন্ডিজ অধিনায়কের হাতে ক্যাচ দেন। সাকিবের রান তখন ৬৮। আর এই আউটে উইন্ডিজরা সেশনে জোড়া উইকেট শিকারে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা কাজে লাগায়।

সাকিব-লিটন জুটি দিনের শুরুটা করেন। লিটন আগের দিনের সঙ্গে চার রান যোগ করে ৩৮ রানে আউট হন। এছাড়া তাইজুল ১৮ এবং নাঈম হাসান ২৪ রান করেন। উইন্ডিজেদর মধ্যে সফল বোলার জোমেল ওয়ারিকান। ১৩৩ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়েছেন এই স্পিনার। এছাড়া দুই উইকেট পেয়েছেন রাকিম কর্নওয়াল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনশেষে বাংলাদেশের প্রাপ্তি মিরাজের সেঞ্চুরি। মিরাজ দেখিয়ে দিলেন চাইলেই ৮ নাম্বারে নেমে সেঞ্চুরি করা যায়। ২০১৬ তে অভিষেক হওয়া মিরাজ সেঞ্চুরি দেখলেন ২০২১ এসে। শেষ পর্যন্ত মিরাজের আউটেই বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৪৩০ রানে। ১০৩ রানে থামেন এই অলরাউন্ডার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *