ঝুপরি ঘরে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা দম্পতির সংসার : জোটেনি বয়স্ক ভতা

Spread the love

তালতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা : সালেহা বেগম দীর্ঘদিন ধরে একটি ভাঙ্গাচুরা ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। ঘরের চালের টিন জং ধরে ফুটো হয়ে গেছে, একটু বৃষ্টি হলেই আরে ঘরে থাকা যায় না, দুর্যোগের আভাস পেলেই ভয়ে ভয়ে থাকেন কখন যেন ভেঙে পড়ে।

বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার বরবগী ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের এক বৃদ্ধ দম্পতি মানিক হাওলাদার (৭০) ও সালেহা বেগম (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে একটি ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করছেন, যেকোনো সময় দুর্যোগ আসলে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে। ঘরের বেড়ায় বড় বড় ফুটো হয়ে বাতাস ঢুকছে, তীব্র এই শীতে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই দম্পতি।

জীবিকার তাগিদে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো ভাবে সংসার চালাচ্ছেন। সালেহা বেগম প্রায় পাঁচ বছর ধরে শ্বাসকষ্ট রোগের ভুগছেন, ভারি কোন কাজ করতে পারেন না। অনেকেই সরকারি-বেসরকারি সাহায্য পেলেও এ পর্যন্ত কিছুই জোটেনি তাদের ভাগ্যে। মানিক হাওলাদার ও তার স্ত্রী সালেহা বেগম এর দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরের সংসারে তিন ছেলে থাকলেও প্রায় ৫ বছর অাগে বড় ছেলে হোসেন হাওলাদার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। জমিজমা যা ছিল ছেলের চিকিৎসার জন্য সব বিক্রি করে এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এই বৃদ্ধ পরিবার। এখন দুই ছেলে ইয়াসিন ও ইসাহাক তাদের পরিবারে অসচ্ছলতার কারণে দিনমজুরের কাজ করছেন।

মানিক হাওলাদার বলেন, একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড এর জন্য মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে অনেকদিন বলছি তারা শুধু বলে এই কিছুদিন পরেই নাম নেওয়া হবে। সালেহা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, স্যার আপনার আইসেন দেখেন আমার ঘরটা একেবারেই ভাঙ্গা, এই ঘরে কেমনে মানুষ থাকে বলেন, এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান সকলের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি, ভোটের আগে মেম্বার, চেয়ারম্যানরা নানা ধরনের আশ্বাস দিলেও নির্বাচিত হওয়ার পর কেউ খোজ রাখে না।

প্রতিবেশী জেসমিন বেগম জানান, একসময় তাদের সবকিছুই ছিল কিন্তু বড় ছেলে হোসেন হাওলাদার ক্যান্সার রোগে মারা যাওয়ার পর খুব কষ্টে দিন কাটছে তাদের, এখন অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছে, তার ঘরটি একেবারেই ভাঙ্গাচুরা, ঘরের মধ্যে ঢুকলে দেখতে পারবেন কোন মানুষ এখানে থাকতে পারে না তাদের একটি ঘর আসলেই দরকার।

এলাকার একাধিক স্থানীয়রা জানান, মানিক হাওলাদার ও সালেহা বেগম খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছে শেষ বয়সে যদি তারা একটি সরকারের দেওয়া উপহারের ঘর পেতো তাহলে বাকি জীবনটা শান্তিতেই কাটতো তাদের।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অাসাদুজজামান মিয়া বলেন, মানিক হাওলাদার ও ছালেহা বেগম আবেদন করলে আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *