নাগরিক রিপোর্ট : দূর্ণীতি দমন কমিশনের (দূদক) কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়েছেন অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আসামী অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্য। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য দূদক কর্মকর্তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। বুধবার মামলার স্বাক্ষ্য দিয়ে বের হওয়ার পর বরিশালে আদালতপাড়ায় এমন ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শিকার দূদক কর্মকর্তা হলেন সমম্বিত বরিশাল জেলা কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক মো. আল আমীন। তিনি বুধবার রাতে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেছেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত নায়েক মো. আলাউদ্দিন ঢালীর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা দূদক কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দূদকের উপ সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিন ঢালী ও তার স্ত্রী মাকসুদা বেগমকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। গতবছর ১১ নভেম্বর মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
জিডিতে অভিযোগ করা হয়, দূদক কর্মকর্তা মো. আল আমিন বুধবার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে আসামী মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ৩/৪ জন তার পথরোধ করেন। তার (আলাউদ্দিন) স্ত্রীকে কেন আসামী করা হলো এবং কেন স্বাক্ষ্য দিলেন তার কৈফিয়ত জানতে চাওয়া হয় দূদক কর্মকর্তার কাছে। তাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেয়া হয়।
জানা গেছে, পরিস্থিতি প্রতিকূলে বুঝতে পেরে দূদক কর্মকর্তা আদালতের প্রধান গেট সংলগ্ন পুলিশ বক্সে গিয়ে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে একঘন্টা পর বরিশাল দূদকের উপ পরিচালক দেবব্রত মন্ডলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে উপ পরিচালক দেবব্রত মন্ডল জানান, এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় জিডি হয়েছে এবং দূদকের উর্ধ্বতন দপ্তরে জানানো হয়েছে। এর বেশী কিছু বলতে অপরাগতা জানান তিনি।
দূদক কর্মকর্তার পথরোধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. আলাউদ্দিন ঢালী বলেন, মামলা দায়েরের আগে তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দূদক কর্মকর্তা মো. আল আমিন। বুধবার আদালতে তিনি তার কাছে টাকা নেয়ার পরও মিথ্যা মামলা দেয়ার কারন জানতে চেয়েছিলেন। অবৈধপন্থায় সম্পদ অর্জন করেছেন কি-না জানতে চাইলে মো. আলাউদ্দিন চরমোনাই মাহফিলে আছেন বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
তবে ৩ লাখ নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে দূদক কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, স্ত্রীকে আসামী করায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন মো. আলাউদ্দিন।
দূদক সুত্রে জানা গেছে, মো. আলাউদ্দিনের ঢাকার মালিবাগে একটি ফ্লাট রয়েছে যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে তার নামে জমির দলিল রয়েছে ৬৯টি। তার স্ত্রী মাকসুদা বেগমের নামে ঢাকার কেরানীগঞ্জে সাড়ে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্লট রয়েছে। এসব সম্পদ অর্জনে আয়ের উৎস্য দেখাতে না পারায় আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী মাকসুদাকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মো. আলাউদ্দিন ২০১২ সালে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে নায়েক পদ থেকে অবসর নেন। তার বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলার তেরচর গ্রামে।##
২০২১-০২-২৬