কিডনি বিক্রির ক্রেতা খুঁজতে রাস্তায় প্লাকার্ড হাতে লেখক

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র অশ্বিনী কুমার হলের সামনে রোববার প্লাকার্ড হাতে দাড়িয়ে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষন করছিলেন মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি। প্লাকার্ডে লেখা- ‘করেনা! ২ বছরের অসহায় মানুষ, অসহায় আমি, কাজ নেই, কর্ম নেই, ৩ লক্ষ টাকা ঋনি, ঋন পরিশোধ করতে কিডনি বিক্রি’। কিডনি বিক্রি করার জন্য ক্রেতা খুজতে এভাবে রাস্তার পাশে দাড়িয়েছিলেন এ ব্যক্তিটি। তিনি বরিশালের সাহিত্য ও শিল্পঙ্গনের পরিচিত মুখ সাইফুল্লাহ নবীন। যিনি পেশায় লেখক ও চিত্রশিল্পী।
করোনার সংকটময় পরিস্থিতিতে উপার্জনের সব পথ হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঋণে জর্জরিত হয়েকিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প লেখক, শিশু সাহিত্যিক এবং চিত্রশিল্পি সাইফুল্লাহ নবীন।
সাইফুল্লাহ নবীনের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরহোগলা গ্রামে। গল্প লেখার পাশাপাশি ঢাকায় বাংলা একাডেমির একুশের বই মেলায় বর্নমালা শিল্প ও স্টল সাঁজসজ্জার কাজ করতেন। তার প্রকাশিত ৪৯টি বই বাজারে রয়েছে। এরমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ১০টি, শিশুতোষ গল্পের বই ২১টি, উপস্যান ১৪টি এবং শিশুদের ছবি আাঁকার বই রয়েছে ৪টি।
সাইফুল্লাহ নবীন জানান, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে উপার্জনের সব পথ বন্ধ। বই বিক্রি শূন্যের কোঠায়। সাইনবোর্ড বা ছবি আকার কাজও নেই বললে চলে। বই লেখার সন্মানির টাকাও দিচ্ছেন না প্রকাশকরা। আর্থিক সংকটের কারনে গত দুই বছরে জমি বন্ধক এবং আত্মিয়-স্বজদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ধার-দেনা করে সংসারের ব্যয় মিটিয়েছেন।
সাইফুল্লাহ নবীন আরও বলেন, তার বড় ছেলে বিএসসিতে, একমাত্র মেয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে এবং ছোট ছেলে অস্টম শ্রেনীর ছাত্র। স্ত্রী ছেলে-মেয়ের দুবেলা খাবার জোগানোই এখন কস্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। পরিচিত মানুষের কাছে টাকা ধার চাইলে তারা মুখ ফিরিয়ে নেন। পাওনাদাররা টাকার চাপ দিচ্ছেন। জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে ওঠায় তিনি দিশেহারা হয়ে একটি কিডনি বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *