বরিশালের হাজেরা বেগম পেলেন ‘বীরঙ্গনা’ স্বীকৃতি

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর বছরে ‘বীরঙ্গনা’ স্বীকৃতি পেলেন স্বীকৃতি পেলেন হাজেরা বেগম। রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে হাজেরা বেগমের হাতে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতার ৮২ হাজার টাকা তুলে দেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার। বরিশাল মহানগরে হাজেরা বেগমই একমাত্র নারী যিনি বীরঙ্গনা স্বীকৃতি পেয়েছেন।
স্বীকৃতি ও ভাতা পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে হাজেরা বেগম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাগো বীরাঙ্গনা কইতো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে হেই সম্মান দেছে, আমি খুব খুশী। শেষ বয়সে ভাতার টাহা দিয়া ভালমতো বাঁচতে পারমু’।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে পাক সেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন বীরঙ্গনা হাজেরা বেগম। জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, হাজেরা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট গ্রামে দিনমজুর মৃত কামিন উদ্দিন চৌকিদারের মেয়ে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে পাক বাহিনীর ক্যাম্পে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয় হাজেরা বেগমকে।
বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পাওয়ার পর রোববার জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে একাত্তরের সেই ভয়াল স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন হাজেরা বেগম। তিনি জানান, ৫ বছর আগে (২০১৬) বরিশাল মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মাধ্যমে তিনি বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পাওয়ার আবেদন করেছিলেন। জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, হাজেরা বেগমের আবেদন যাছাই-বাছাই শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি তাকে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে (নং ৩৮১)। একই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থ বছরের জুলাই থেকে হাজেরা বেগমের অনুকুলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বরাদ্ধ দিয়ে তা ছাড় করা হয়েছে।
তিন ছেলে ও এক মেয়ের জননী হাজেরা বেগম বরিশাল নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরানপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. জালাল হোসেনের স্ত্রী।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরিশাল জেলা কমান্ডের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, হাজেরা বেগমকে স্বীকৃতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা খুশি হয়েছেন। তার (হাজেরা) ন্যার্য্য দাবী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অসামান্য ত্যাগ ও কীর্তিগাথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। হাজেরা বেগমের মতো মহিয়সী নারীদের পাশে রাষ্ট্র সবসময় থাকবে। জাতি তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরন রাখবে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *