নাগরিক রিপোর্ট : শরীরে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়ায় নিখিল সরকারের (৩৬) শরীরে ইনজেকশন পুশ করেন কথিত পল্লী চিকিৎসক বাসুদেব মালাকার। এরপরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নিখিল। অপচিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় আত্মগোপন করেছেন বাসুদেব মালাকার। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের পীড়েরপাড় গ্রামে। অপচিকিৎসায় মৃত নিখিল সরকার ওই গ্রামের মৃত নিতাই সরকারের ছেলে। নিখিল দুই শিশু সন্তানের জনক। তিনি স্থানীয় লোকনাথ বাজারে ফার্নিচার ব্যবসা করতেন।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদ জানান, পীড়েরপাড় গ্রামে নিখিল নামক এক ব্যক্তির অপচিকিৎসায় মৃতুর ঘটনায় অভিযোগ দিয়েছেন তার স্ত্রী উর্মিলা সরকার। নিখিলের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নিখিল সরকারে স্ত্রী উর্মিলা সরকার অভিযোগ করেন, তার স্বামী শনিবার সন্ধ্যায় দিকে ঘরে ফিরলে কিছু সময় পরে শরীরে এলার্জি দেখা দেয়। শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে ওঠে। স্থানীয় লোকনাথ বাজারের পল্লী চিকিৎসক বাসুদেব মালাকারকে খবর দিলে তিনি এসে নিখিলকে পর পর চারটি ইনজেকশন দেন। কিছুক্ষনের মধ্যেই তার স্বামী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নিখিলের মৃত্যুর পর পরই সটকে পরেন কথিত পল্লী চিকিৎসক বাসুদেব। আত্মগোপন করায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বাসুদেবের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বাসুদেবের স্ত্রী বাসানী মালাকার জানান, শনিবার রাত থেকে তার স্বামী কোথায় আছেন তিনি জানেন না।
পীরেরপাড় গ্রামের একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, বাসুদেব মালাকারের ভুল চিকিৎসায় নিখিলের মৃত্যু হয়েছে। কয়েকদিন আগেও বাসুদেবের ভুল চিকিৎসায় একটি শিশু মারা গেছে। স্থানীয়রা জানান, একসময় বাসুদেব দিনমজুরের কাজ করতো। গত তিনবছর ধরে সে লোকনাথ বাজারে ফার্মেসী দিয়ে মানুষের চিকিৎসা দেয়া শুরু করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য উপেন বিশ্বাস জানান, নিখিলের স্ত্রী ও প্রতিবেশীরা ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন। বাসুদেব মালাকারের বিরুদ্ধে অনুমান নির্ভর চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শওকত আলী বলেন, খোজ নিয়ে জানা গেছে বাসুদেব মালাকারের ফার্মেসীর কোন লাইসেন্স নেই। চিকিৎসা সেবা দেয়ার কোন প্রশিক্ষণও তিনি নেননি।##
২০২১-০৭-২৫