নাগরিক রিপোর্ট : বরিশালের হিজলা উপজেলার আলোচিত সন্ত্রাসী নুরু বাবুচীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মুলাদী ও হিজলা উপজেলার মধ্যবর্তী নদী নয়াভাঙ্গুলী থেকে মঙ্গলবার বিকালে অজ্ঞাতনামা হিসাবে লাশ উদ্ধার করা হয়। গভীর রাতে স্ত্রী খাদিজা বেগম লাশটি তার স্বামী নুরু বাবুর্চীর বলে শনাক্ত করেছেন।
নুরু বাবুচী হিজলা থানা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। গৌরবদী ইউনিয়নে মেঘনার দূর্গম চরে পালিয়ে থাকাবস্থায় কয়েক মাস আগে তিন ছেলেসহ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। ছেলেদেরসহ জামিনে মুক্তি পাওয়ার ২০ দিন পর নুরু বাবুর্চী নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান জানান, দৃর্বৃত্তরা নুরু বাবুর্চীকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। তার চোখ দুটি উপড়ে ফেলা হয়। বাম হাতের কবজি ছিল বিচ্ছিন্ন।
ওসি আরও জানান, মঙ্গলবার বিকালে নয়াভাঙ্গুনী নদীতে স্থানীয়রা অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ভাসমান লাশ দেখে পান। খবর পেয়ে মুলাদী থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। রাতে খাদিজা বেগম নামক এক নারী এসে পরনের জমা ও লুঙ্গি দেখে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে জানায়, লাশটি তার স্বামী নুরু বাবুর্চীর। খাদিজা পুলিশকে জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে কে বা কারা বাড়ি থেকে নুরু বাবুর্চীকে ডেকে নেয়ার পর তিনি নিঁখোজ ছিলেন। এ ঘটনায় ৯ জনের নামোল্লেখ করে স্ত্রী খাদিজা বেগম মুলাদী থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান ওসি মাকসুদুর রহমান।
হিজলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারিক হাসান রাসেল জানান, নুরু বাবুর্চীর বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যারচেষ্টা, ডাকাতি ও নারী নির্যতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে হিজলা থানায়। একই অভিযোগে আরও বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। অস্ত্র ও ডাকাতি মামলায় ১৩ বছর কারাদন্ড ভোগ করে ২০১৪ সালে মুক্তি পায় সে। এরপর এলাকায় ফিরে সে আরও বেপরোয়া হয়ে পড়ে।
নুরু বাবুর্চীর বাড়ি মুলাদী উপজেলার সীমানা সংলগ্ন হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের কাউরিয়া বাজার এলাকায়। তবে তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মুলাদী কাজিরহাট এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন।
গ্রামবাসী সুত্রে জানা গেছে, নুরু বাবুচী ও তার ছেলেরা মোটরসাইকেলে প্রায়ই ঝটিকা গ্রামে ঢুকে প্রতিপক্ষকে কুপিয়ে পালিয়ে যেতো। গত এক বছরের মধ্যে তাদের হামলায় পঙ্গু হয়েছেন নুরু বাবুচীর আপন বড় ভাই দুলাল বাবুর্চী ও তার স্ত্রী, চাচা কাঞ্চন বাবুচী ও তার ছেলে শহীদ বাবুর্চীসহ কমপক্ষে ৭ জন। সর্বশেষ কারাগার থেকে বের হয়ে চাচাত ভাই খোকন বাবুর্চীকে অপরহন করে সাদা ষ্টাম্পে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়। ##
২০২১-০৮-১১