চাকুরীচ্যুত হলেন বিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১২ জন

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : বরিশাল সিটি করপোরেশণের (বিসিসি) প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান ও দুই নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১২ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চুড়ান্তভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে পর্যায়ক্রমে তাদের কাছে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়ার অফিস আদেশ পৌছানো হয়। স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুতরা এর আগে কেউ সাময়িক বরখাস্ত আবার কেউ কেউ বিশেষ ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসাবে সংযুক্ত ছিলেন।
এই ১২ জনসহ গত দুই বছরের মধ্যে বিসিসিতে কমপক্ষে ২০ জনকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করেছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তাদের সকলেরর বিরুদ্ধে দূর্ণীতি-অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সর্বশেষ চাকুরীচ্যুত ১২ জন হলেন- বিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ন কবির ও কাজী মনিরুল ইসলাম স্বপন, সহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম টিপু, উপ সহকারী প্রকৌশলী কমল কৃঞ্চ দাস, জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেল, সহকারী বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মইন উদ্দিন, চিফ অ্যাসেসর মুশফিক আহসান আজম, সম্পত্তি শাখার ষ্টোর অফিসার মাহবুবুর রহমান শাকিল, আইন সহকারী মো. রফিকুল ইসলাম, হিসাব সহকারী মো. সালাম সরদার এবং হাটবাজার শাখার ষ্টল সহকারী আতাউর রহমান।
বিসিসি সুত্রে জানা গেছে, ১২ জনকে চুড়ান্তভাবে চাকুরীচ্যুত করার আদেশে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন স্বাক্ষর করেন গত ১৯ জুলাই। দশদিন পর ২৯ জুলাই চিঠিতে অফিস স্মারক নম্বর দেয়া হয়।
চাকুরীচ্যুতির আদেশের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উল্লেখিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘ সময় সাময়িক বরখাস্ত এবং ওএসডি করে রাখা হয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে তার সংশোধন হননি। উপরোক্ত একই অপরাধের পূনরাবৃত্তি করায় বিসিসির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এসব কারনে গত ২৩ আগষ্ট বিসিসির ৪র্থ পরিষদের নবম সাধারন সভায় ৯০ দিনের বেতন পরিশোধ করে ১২ জনকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। জনসংযোগ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) স্বপন কুমার ১২ জনকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরবর্তীতে বিসিসির পক্ষ থেকে বিবৃতির মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করা হবে।
চুড়ান্তভাবে চাকুরীচ্যুত বিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, তাদের চাকুরীচ্যুত করার ক্ষেত্রে চাকুরীবিধিমালা অনুসরন করা হয়নি। গত ২ বছর যাবত ওএসডি করে রাখা হলেও তাদের বেতন প্রদান করেননি বিসিসি। স্বপন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে অবিচার করা হয়েছে।
এর আগে চাকুরীচ্যুত হওয়া আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত করার এখতিয়ার নেই বিসিসি কর্তৃপক্ষের। তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয়ে সুপারিশ পাঠাতে পারেন। তা না করে একের পর একজনকে সরাসরি চাকুরীচ্যুত করে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ তার দুরদর্শীহিনতার পরিচয় দিচ্ছেন। এ কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তার অভাবে তারা আপাতত আইনের আশ্রয়ে না গেলেও ভবিষ্যতে যাবেন।
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুুল্লাহ মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের পর বিভিন্ন সময়ে স্থায়ীভাবে আরও চাকুরীচ্যুত হয়েছেন বিসিসির বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, ট্রেড লাইসেন্স শাখার তত্ত্বাবধায়ক আজিজুর রহমান শাহিন, হাট-বাজার শাখার তত্ত্বাবধায়ক মো. নুরুল ইসলাম, উপ সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ এবং মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী- ২ শাখাওয়াত হোসেন শাহিন। বেতন বন্ধসহ বিভিন্ন শাস্তির আওতায় আছেন অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া সাদিক আবদুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহনের পর পরই তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসমা আক্তার স্বেচ্ছায় চাকুরী থেকে অবসরে যান।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *