বিলীনের পথে সবুজ গ্রাম পামেরহাট

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য মোকামে দাঁড়ালে কীর্তণখোলার অপর তীরে দেখতে পাওয়া গ্রামটির নাম চরকাউয়া ইউনিয়নের পামেরহাট। শুধুমাত্র নদীর কারনে নগর থেকে বিচ্ছিন্ন গ্রামটি সবুজ গাছপালায় ঘেরা। কীর্তণখোলা নদীর ভাঙ্গনের ধ্বংসযজ্ঞে সবুজ এ গ্রামটির দৃশ্যপট গত দুইমাসের মধ্যে বদলে গেছে। ভাঙ্গনকবলিত মানুষের আহাজারি চলছে সেখানে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত দুই মাসের মধ্যে কমপক্ষে ২০ একর ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। যারমধ্যে ছিল বসতবাড়ি ও কৃষিজমি। ভাঙ্গনের হুমকির মুখে আছে আজাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মসজিদ, মাদ্রাসা ও আরও কয়েকটি বসতবাড়ি।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলো তাদের বসতঘর ও আসবাপত্র সরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন আশপাশের বাড়ির খোলা জায়গায়। ডালিয়া বেগম এক নারী বলেন, তাদের জমিজমা বলতে ছিল ভিটেবাড়িটি। সেটিও রোববার কীর্তণখোলায় বিলীন হয়েছে। কোথায় আশ্রয় নেবেন তা নিয়ে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে তার পরিবার। ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারানো সবগুলো পরিবার একই অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রেমন শরীফ বলেন,দুইমাস আগে পামেরহাট এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনে ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডালিয়া বেগম, মো. আলম, মো. সোহেল, মো, খোকন, মৃত মজিদ মাষ্টারের বাড়ি সহ আরও কয়েকটি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এর আগে নদীতে বিলীন হয়েছে মানিক হাওলাদার, কালাম হাওলাদার, মোর্শেদ হাওলাদার, শাহাবুদ্দিন সিকদার, হায়দার আলীসহ আরও অনেকের বাড়ি।
চরকাউয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জেলা পরিষদ সদস্য মো. অলিউল ইসলাম অলি বলেন, ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের জরুরী ত্রান সহায়তা প্রয়োজন। অলিউল ইসলাম আরও বলেন, ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরিশাল কার্যালয়ে একাধিকার ধর্ণা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, পামেরহাটে ভাঙ্গনরোধ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রকল্প গঠন করা হয়েছে। সেটি অনুমোদিত হলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
বরিশাল পাউবোর এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, পামেরহাটসহ ওই এলাকার ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহনে একটি প্রকল্প অনেক আগে উর্ধ্বতন দপ্তরে প্রেরন করা হয়েছে। সেটি এখনও অনুমোদিত হয়নি। তাছাড়া বাজেট সংকট থাকায় জরুরী ব্যবস্থাও তারা গ্রহন করতে পারছেন না। তারপরও তারা জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের নানা উপায় খুঁজছেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *