নাগরিক রিপোট : বরিশাল নগরীর উচু অঞ্চল কাউনিয়া প্রধান সড়ক এলাকায় কখনও জোয়ারের পানিও প্রবেশ করেনা। একপাশ দিয়ে জেলখাল প্রবাহিত হওয়ায় হয়না জলাবদ্ধতা। অথচ এই এলাকাতে খেলার মাঠে নির্মিত হচ্ছে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল। খেলাধুলা ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটিতে এ অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। মাঠ রক্ষার জন্য তারা গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
শিশু কিশোর সংগঠন জাগৃহী খেলাঘর আসরের সাধারন সম্পাদক নওরোজ কবির মানববন্ধনে বলেন, সাইক্লোন শেল্টার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় নির্মাণ হওয়া আবশ্যক। নগরীর মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট করে নির্মাণ করার কোন যৌক্তিকতা নেই।
বক্তারা বলেন, শুধু বিদ্যালয়ের ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীরা নয়, এলাকার কিশোর-তরুনরা নিয়মিত এ মাঠে ক্রিকেট ফুটবল খেলেন, সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয় এ মাঠে। যেকোন মূল্যে তারা মাঠটি রক্ষা করবেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাউনিয়া প্রধান সড়কে এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ব পাশে নতুন ভবন নির্মানের জন্য মাঠের প্রায় অর্ধেক অংশ জুড়ে মাটি খোড়ার কাজ চলছে। দুইদিন আগে শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছেন। নির্মিতব্য পেছনে বড় অংশ ফাঁকা পড়ে আছে। সিটি করপোরেশন ও প্রয়াত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম মোনায়েমের ওয়ারিশদের মধ্যে মামলা চলমান এমন একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে ফাঁকা জমিতে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে, শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রয় দেড়কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য তিনতলা ভবনের নিচতলায় সাইক্লোন শেল্টার এবং দোতালা ও তিনতলায় শ্রেণীকক্ষ থাকবে।
পেছনে জমি ফাঁকা রেখে মাঠের ভেতর নতুন ভবন নির্মানের কারন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ভবন নির্মানের স্থান নির্ধারন করেছে।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন তালুকদার বলেন, মাঠের পূর্ব দিকের লাগোয়া জমি নিয়ে সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সঙ্গে একটি পরিবারের মামলা চলছে। বিসিসির নিয়মানুযায়ী সীমানা থেকে ৩ ফুট ফাঁকা রাখায় মাঠের বড় অংশ নির্মিতব্য ভবনের ভেতরে চলে এসেছে। আমির হোসেন তালুকদার জানান, প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সংলগ্ন মানিক মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বড় মাঠ আছে। নতুন ভবন নির্মানের বিরোধীতা করা স্থানীয় রাজনীতির একটি অংশ বলে দাবী করেন সভাপতি।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের জেলা সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া ফাঁকা জমি প্রভাবশালী মহলকে দখলের সুযোগ করে দিতে মাঠের মধ্যে ভবন নির্মান করা হচ্ছে। একাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষার জন্য তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীমের কাছে যাবেন এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবেন।
প্রবীন শিক্ষক নুরুল আমিন খানের সভাপতিত্বে গতকালকের মানববন্ধনে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুর্তজা আবেদীন, উন্নয়ন সংগঠক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু, ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হক নীলু, জাসদ নেতা আশরাফুল হক, কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারন সম্পাদক দুলাল মজুমদার, বেলা লিংকন বায়েন, বাসদ আহবায়ক ইমরান হাবিব রুমন বক্তৃতা করেন।##
২০২১-১০-০৮