যানজটে জান যায় ২০ স্পটে

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল নগরীর সড়কে সড়কে সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে দুপুর আবার বিকেল থেকে রাতে যানবাহনের চাপে সাধারনের পথ চলতে নাবি:শ্বাস হয়ে উঠছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিক বিভাগী দাবী করেছে, নগরীর কমপক্ষে ২০টি স্পটে অধিক মাত্রায় যানজট সৃস্টি হচ্ছে। আর এর প্রধান কারন ৩টি। যানজট নিরাসনে নতুন কয়েকটে পরিকল্পনা কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএমপি।

নগরীর কাশিপুর থেকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল পেড়ুতে যানজটে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় ব্যায় হয় ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলামের। তিনি এরপরও সদর রোডে ফিরতে যানজটের সম্মুখীন হন নতুনবাজার, জেলখানার মোড়, কাঠপট্টির মোড়, সদর রোড, গীর্জামহল্লা। মাইনুল জানান, সাম্প্রতিক সময়ে যানজট এতো বেশি মাত্রায় বেড়েছে যে মানুষের সড়কে চলা দু:সহ হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে অফিসকালীন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নগরীর বটতলা, সদররোড, গীর্জামহল্লা, ফলপট্টি, কাকোলির মোড়, জেলখানার মোড়, নতুনবাজার, নথুল্লাবাদ, সাগরদি, রুপাতলী তীব্র যানজট দেখা দেয়। বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত একই স্পটগুলোতে অসহনীয় যানজট দেখা দেয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেন চাকুরেজীবীরা।

জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক আ: রহিম এ তথ্য স্বীকার করে বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রন করতে হলে রাস্তায় গাড়ি কমাতে হবে। সোমবার থেকে তারা কড়াকড়ি শুরু করেছেন। প্রায় ৩০টি অবৈধ থ্রি হুইলার আটক করেছেন। পরিদর্শক রহিম বলেন, জেলার মাহিন্দ্রা, সিএনজি নগরীতে ঢুকছে। হলুদ অটো সর্বোচ্চ ৫ হাজার চলতে পারে। সেখানে আছে ১২ হাজারের উপর। তাছাড়া গাড়ি বেশি, রাস্তা সরু। আমতলা থেকে রুপাতলী পর্যন্ত রাস্তা বাড়ানো দরকার। তিনি বলেন, পূজার কারনে কয়েকদিন ধরে তাদের ফোর্স কমপক্ষে ৫০জন কম।

টিআই ৭জনের স্থলে ৩জন, সার্জেন্ট ২৫ জনের স্থলে ১৩জন, কনস্টেবল ৩০জন কম রয়েছে। তিনি দাবী করেন, করোনার পর লকডাউন সিথিল করায় যানবাহন বেড়েছে। তাই যানজটও বেড়েছে।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা সাধারন সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, নগরীতে এতো যানজট ছিল। না। হঠাৎ করে কেন এতো দুর্ভোগ বাড়লো তা ট্রাফিক বিভাগকে খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে অফিস সময়কালীন ছোট্ট এ নগরী মানুষকে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে থাকা কস্টকর। তিনি অভিযোগ করেন, অনেক স্পটে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ খুজে পাওয়া যায়না। বাধ্য হয়ে সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে যানজট নিয়ন্ত্রনে। এইসব সংকট কাটাতে এখন থেকেই সিটি করপোরেশন এবং ট্রাফিক বিভাগকে ঊদ্যোগী না হলে যানজটের নগরীতে পরিনত হবে নগরী।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) তানভির আরাফাত বলেন বলেন, যেভাবে অবৈধ গাড়িগুলো নগরীতে চলছে সেক্ষেত্রে জট নিয়ন্ত্রন কঠিন। যানজট রোধে গত ২ দিন ধরে তারা অভিযান পরিচালনা করে অনেকগুলো অবৈধ যানবাহন আটক করেছেন। এই অবৈধ যানগুলো নগরীর রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক এমনকি পুলিশেরও রয়েছে। এগুলো নগরী থেকে সরানোর উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে।
নগরীর সাগরদি, নথুল্লাবাদের মত সরু সড়কের কারনে যানজট ঠেকানো কঠিন। এখানে কোন পাইপাস নেই। রুপাতলীতেও যত্রতত্র বাস ফেলে রাখছে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, নগরীর মধ্যে নথুল্লাবাদে বাস টার্মিনাল, নেই একটি ট্রাক স্টান্ড। আর নগরের প্রান কেন্দ্র গীজামহল্লা, ফলপট্টিতে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা নেই। এটি করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তিনি বলেন, নগরীর ১৬ থেকে ২০টি স্পটে এখন যানবাহনের চাপ বেশি। কিন্তু নগরীতে স্পট রয়েছে ৪০টি। তাদের সার্জেন্ট মাত্র ১৩জন থাকায় যানজট নিয়ন্ত্রনে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তবে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ দাবী করেছেন এসব যানবাহনকে রেজিস্ট্রেশন প্রদানের পাশাপাশি নীতিমালার আওতায় এনে চলাচলের অনুমতি দেয়া দরকার। এ দাবীতে সোমবারও তারা নগরীতে বিক্ষোভ করেছেন। রিকশা-ভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল মল্লিক বলেন, করোনার পরে শ্রমজীবীরা চরম অভাবে রয়েছেন। তাদের আয়ের একমাত্র অবলম্বন ব্যাটারিচালিত যান বন্ধ করে দিলে আরও বেকায়দায় পড়বেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *