৩০ জুলাই ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল: ইসলামী ও সমমনাদের ঐক্যবদ্ধ করছে চরমোনাই পীরের দল

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে চায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেওয়া এ দল। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক করে ইসলামী আন্দোলন। ৩০ জুলাই ঘোষিত ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচিতেও ইসলামী ও সমমনা অনেক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে ইসলামী আন্দোলনের আমন্ত্রণে সাড়া দিলেও এখনও তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সংশি¬ষ্টরা অবগত নয় বলে জানা গেছে। ইসলামী ও সমমনাদের ঐক্যবদ্ধ করা প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন সোমবার বলেন, ‘আমরা ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে আমাদের একটি কর্মসূচিতে বিভিন্ন দলের নেতাদের সাড়া পেয়েছি। ৩০ জুলাই আরেকটি কর্মসূচিতে সংশি¬ষ্ট অনেককে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে।’ তবে এ উদ্যোগকে কোনো জোট নয়, ঐক্য হিসেবে উলে¬খ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমমনাদের নিয়ে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের একটি প¬াটফর্ম তৈরি করার জন্য দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১১ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিভিন্ন দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সূত্র মতে, ওই অনুষ্ঠানে কয়েক বছর আগে ২০ দলীয় জোট ত্যাগী ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, ২০ দলের শরিক খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগদানকারী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান, মুসলিম লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন এবং যুক্তফ্রন্টের শরিক বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। সংশি¬ষ্টরা জানান, আগামী ৩০ জুলাই ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ বিভিন্ন ইস্যুর প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি পালন করবে ইসলামী আন্দোলন। এ কর্মসূচিতেও ইসলামী ও সমমনাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ কর্মসূচির আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে দেশে একটি রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে একেক দল একেকভাবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। ইসলামী আন্দোলন এ ধরনের একটি উদ্যোগ নিতে পারে। একই ধরনের মন্তব্য করে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল জলিল বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনের উদ্যোগের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। স্বাভাবিক দাওয়াত হিসেবেই তাদের গোলটেবিল বৈঠকে আমাদের মহাসচিব যোগ দেন। তবে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য হলে সেটা অবশ্যই ভালো খবর। এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখব।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেশ আলোচিত হয়ে ওঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ওই সময় বিভিন্ন ভোটের হিসাবে তৃতীয় স্থানে চলে আসে দলটি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন ইসলামী দল আওয়ামী লীগ বা বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে সম্পৃক্ত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেষ্টা করলেও ইসলামী আন্দোলন এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে আবার আলোচিত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত নানা অভিযোগে ওই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে দলটি। পরবর্তীতে বর্তমান সরকারের অধীনে আপাতত আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তাই আসন্ন স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব না। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি যথাসময়ে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *