নাগরিক রিপোর্ট:
দেহব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগে বরিশাল নগরীতে এক কিশোরীর (১৪) বাবা, মাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে রোববার দুপুুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়। অপরদিকে কিশোরীকে মহানগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
নগরের ১৫নং ওয়ার্ডের নিউ সার্কুলা রোড এলাকার গাজী বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বাবা মায়ের সাথে ওই কিশোরী বসবাস করতো। অভিযোগকারী কিশোরী সেখানকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
শনিবার মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খানের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে কিশোরী উল্লেখ করেছে- মা নাসরিন বেগম ও বাবা সামসুল সিকদার তার বাবা ও মা। এরা দুজনেই বাসায় বসে মাদক ও নারী ব্যবসা করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁরা দুজনেই একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
কয়েকমাস ধরে ওই কিশোরীকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছেলন তাঁরা। কিন্তু কিশেরারী তাতে অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতন করতেন বাবা ও মা। গত জুন মাসে মা নাসরিন নগরীর মুনসুর কোয়ার্টার এলাকার মিম মধুঘরের মালিক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের বাসায় নিয়ে আনোয়ারের সঙ্গে একটি কক্ষে আটকে রাখে ওই কিশোরীকে। পরে আনোয়ার তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ করেছে কিশোরী।
কিশোরীটির দাবি- গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তাকে ১২৫ বার যৌন নির্যাতন করেছেন ব্যবসায়ী আনোয়ার। এতে সহযোগিতা করেছেন কিশোরীর বাবা ও মা।
শনিবার বিকেলে ঘর থেকে পালিয়ে ওই কিশোরী পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানকে বিস্তারিত জানালে তিনি তৎক্ষণিক আইনী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কোতয়ালী মডেল থানাকে নির্দেশ দেন।
পরে কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে কিশোরীর মা নাসরিন বেগম, বাবা সামসুল সিকদার ও মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে। রোববার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযুক্তদের মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে সোপর্দ করলে আদালত জেল হাজতে পাঠানোর নির্ধেশ দিয়েছেন।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানান, কিশোরীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় কিশোরীর বাবা-মা সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।##