জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে খালেদা জিয়া : সুচিকিৎসার দাবীতে শনিবার বিএনপির অনশন

Spread the love
নাগরিক ডেস্ক : গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিতসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা-মহানগরে শনিবার ৮ ঘন্টার গণ অনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু জয়নাল আবেদীন,আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমা্ন হাবিব, আবদুস সালাম কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, জহির উদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, আমিনুল হক, রিয়াজউদ্দিন খান নসু, শায়রুল কবির খান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রীর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিতসার জন্য বিদেশে প্রেরনের দাবিতে আগামী ২০ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারা জেলা-মহানগরে গণঅনশন কর্মসূচি পালনের জন্য আমি সকলকে আহবান জানাচ্ছি।’ রাজধানী ঢাকার ভেন্যু সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকায় সকাল ৯টা থেকে ৪টা এই কর্মসূচি করবে। এটা আমরা ভেন্যু পাওয়ার সাপেক্ষে ভালো স্থান পাই সেখানে অথবা সবশেষে কোথায়ও না পাওয়া গেলে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মসূচি পালন করবো।’
মির্জা ফখরুল আবারো সরকারের উদ্দেশ্যে দাবি রেখে বলেন, ‘খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় নেতা। তার চিকিতসার জন্য তাকে বিদেশে চিকিতসার সুযোগ দেয়া হবে না-এটা অমানবিক। আমরা অনতিবিলম্বে তার জীবন রক্ষার জন্য তাকে বিদেশে চিকিতসা গ্রহনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
গত ১৩ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরদিনই তাকে সিসিইউতে নিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষনে হাসপাতালের হৃদরোগ বি্শেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড চিকিতসা দিচ্ছেন। ৭৬ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বুহ বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
জাতীয় সংসদে আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্য প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন আইন নেই বলে আইনমন্ত্রী যে কথা বলেছেন এটা সঠিক নয় দন্ডবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার শর্তহীন অথবা শর্তযুক্ত ভাবে যে কারো দণ্ডাদেশ স্থগিত অথবা মওকুফ করতে পারেন। বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সরকার স্বতঃস্ফূর্তভাবে দণ্ডাদেশ স্থগিত করেছেন, মওকুফ নয়। ওই আইনে বলা আছে, সরকার যদি মনে করে এই শর্ত পরিবর্তন সংশোধন বা অন্য কোন শর্ত আরোপ করতে পারে। অর্থাৎ এটা সম্পূর্ণভাবে সরকারের এখতিয়ার।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। দেশে যতটা সম্ভব চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছেন। চিকিৎসকরা বারবার তাকে বিদেশে উন্নত সেন্টারে ট্রানস্ফার করতে বলেছেন। বিএনপি মহাসচিব খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বলেন, রক্ত দেওয়া হয়েছে, আজকে এন্ডোস্কোপি করানো হয়েছে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এ দেশের যা কিছু চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানে আর সম্ভব নয়। এখন তাকে বিদেশ নিতে হবে । চিকিৎসকেরা বলেছেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) যে অবস্থা এখনও তা সমস্যার সমাধানযোগ্য। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা না পেলে যেকোনো মুহূর্তে এমন অবস্থায় যেতে পারেন যখন কোনো চিকিৎসা কার্যকর হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *