বহিস্কার ‘অর্থহীন’, মাঠ ছাড়বেন না আ’লীগের ৭ বিদ্রোহী প্রার্থী

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : দল থেকে বহিস্কার হলেও বরিশালে ৪ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ৭ প্রার্থী মাঠ ছাড়ছেন না। বহিস্কৃতদের দাবী, দলে তাদের পদপদবী নেই, কেউ কেউ এর আগেও বিভিন্ন সময় বহিস্কৃত হয়েছিলেন। বহিস্কারদেশ কিম্বা প্রত্যাহার কোন কিছুরই কাগজপত্র পাননি তারা, তাই ‘বহিস্কার’ নামক শব্দটি তাদের কাছে গুরুত্বহীন।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থধাপে ইউপি নির্বাচনে বরিশালের ৫ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যেই ৪ ইউনিয়নে ৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জেলা আওয়ামীলীগ বহিস্কার করেছে। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার রাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বহিস্কৃতরা হলেন- বাকেরগঞ্জ উপজেলার নেয়ামতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামাল হোসেন তালুকদার (চশমা), কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মাজহারুল ইসলাম মনির (ঘোড়া), পদহীন নেতা সোহরাব হোসেন মৃধা (আনারস), দূর্গাপাশা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম সিরাজুল ইসলাম (আনারস), পদহীন নেতা আ: ছালাম খান (মোটরসাইকেল) চরামদ্দি ইউনিয়নে পদহীন নেতা শাহাবুদ্দিন খোকন (আনারস) এবং হিজলা উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক ধুলখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল ঢালী।
জামাল ঢালী বলেন, ২০১৭ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাকে উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল বলে শুনেছেন। তবে কোন কাগজপত্র পাননি। ভোটের পরে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক তাকে মৌখিকভাবে বলেছেন তার বহিস্কারদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। এবারও লোকমুখে শুনেছেন তিনি বহিস্কার হয়েছেন। এসবকে গুরুত্ব দেননা বলে জানান জামাল ঢালী। তিনি অভিযোগ করেন, নৌকার লোকজন কেন্দ্র দখলের পায়তারা করছে। নৌকার প্রার্থী ধুলখোলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জামাল ঢালী আগে থেকে মেঘনায় নৌযানে চাঁদাবাজী ও মাছঘাট দখলের সঙ্গে জড়িত। একইভাবে নির্বাচনেও জিততে চান।
নিয়ামিত ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, তিনি দলের কোন পদে নেই। তাহলে কেনই বা বহিস্কার। এমন বহিস্কার এর আগেও ২-৩ বার হয়েছেন। তারা সুষ্ঠ নির্বাচন চান। কিন্তু সাধারন মানুষ ভীতের মধ্যে আছে। নৌকার বহিরাগত লোকজন মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে যাচ্ছে। একাধিকবার বোমাবাজী, সংঘাত হয়েছে।
নিয়ামতি ইউপির নৌকার প্রার্থী মতিউর রহমান বাদশা বলেন, বহিস্কৃতরা আওয়ামীলীগ নেতা বলে ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা দলের কেউ না হলে নৌকা প্রতিক কেন চেয়েছিলেন? নির্বাচনী সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব মিথ্যাচার। বিদ্রোহীরা নৌকার লোকজনকে হুমকী ধামকী দিচ্ছে।
চরামদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সাহাবউদ্দিন খোকন বলেন, তিনি আওয়ামীলীগের সাধারন সদস্য ছিলেন। এই বহিস্কারে কোন সমস্যা নেই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মাঠেই আছেন। এ ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী গাওছেল আলম খান লাল বলেছেন, নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠ রয়েছে।
পদহীন নেতাদের বহিস্কারের গুরুত্ব কতটুকু জানতে চাইলে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, তারা আওয়ামীলীগের নাম ব্যবহার করেন। এজন্য তাদের তাদের বহিস্কার দেখানো হয়েছে। এরপরও ওই প্রার্থীদের নির্বাচনী মাঠে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরপরে আমাদের আর কিছু করার নেই’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *