বাড়ছে কোভিড, উপায় নেই ওমিক্রন সনাক্তের

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশালে দিন দিন বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। গত সপ্তাহে যা শুন্যের কোঠায় ছিল এখন তা ১, ২, ৫ সংখ্যায় হাটছে। সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার বরিশাল বিভাগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে ৫জন। কিন্তু আক্রান্তরা করোনা নাকি ওমিক্রনের ভেরিয়েন্টে তা জানার কোন উদ্যোগ এখনও নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সিভিল সার্জন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বরিশালে আক্রান্তদের মধ্যে কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়নি- এমনটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কেননা কোভিড এর ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন সনাক্তের ব্যবস্থা এ অঞ্চলে নেই। বরিশালে কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত আছে কি না তা পরীক্ষা করতে রাজধানীতে নমুনা পাঠাতে হবে বলে জানান বিভাগীয় পরিচালক। এদিকে ওমিক্রন নিয়ে শংকা দেখা দিলেও নগরীসহ গোটা জেলায় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা: হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, গত সপ্তাহে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শুন্যের কোঠায়। কিন্তু শনিবার ১জন, রবিবার ২জন সোমবার ৩ জন, মঙ্গলবার ৫ আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বরিশালের ১জন এবং বরগুনা ও পিরোজপুরে ২জন করে। যার ফলে এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিচালক ডা: হুমায়ুন বলেন, এগুলো ওমিক্রন কিনা তা এখনও পরীক্ষা করা হয়নি। এটির জিনোম সিকুয়েন্স নির্ধারন করাও হয়নি। এই যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তার মধ্যে ওমিক্রন আক্রান্ত আছে কি না তা জানতে রাজধানীতে নমুনা পাঠাতে হবে। যদিও এধরনের উদ্যোগ এখনও নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, গতকালের এক সভায় বিধিনিষেধ আরপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জনগনকে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে বলে জানান পরিচালক ডা: হুমায়ুন।

মঙ্গলবার সকালে নগরীর ব্যস্ততম সদর রোড, গীর্জা মহল্লা, চকবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারন মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই। এক শ্রেনীর মানুষ মাস্ক পড়লেও তা মুখের নিচে পড়ে থাকে। হোটেল, রেস্তোরা, বিনোদন স্পটেও একই অবস্থা। নগরীর কাউনিয়া এলাকার গৃহিনী রুপসা জাহান বলেন, গতাকাল বিবির পুকুর সংলগ্ন বেলভিউ ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সেখানে রোগীর তীব্র ভীড় দেখা গেছে। মেলা, বিনোদন কেন্দ্র, মার্কেটে মানুষের চাপ বাড়ছেই। যেহেতু কোভিড বাড়ছে, সেহেতু এখনই সচেতন হয়ে আক্রান্তদের মধ্যে নতুন ভেরিয়েন্ট আছে কিনা তা সনাক্তের ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের তথ্য প্রদানকারী জাকারিয়া খান স্বপন বলেন, পিসিআর ল্যাবে করোনা পজেটিভের হার বাড়ছে। গতকাল সনাক্তের হার ছিল ৫ ভাগ। এর আগে ৪, ৩ হারে ছিল। গতকালও উপসর্গ নিয়ে বাবুগঞ্জ, নলছিটির ২জন করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, এ হাসপাতালের ল্যাবে ওমিক্রন সনাক্তের উপায় নেই। তাই আক্রান্তদের কারো মধ্যে ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন আছে কিনা তা বোঝার উপায় নেই।

করোনাকালীন দায়িত্বপালন করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মৈত্রী ভলান্টিয়ার্স এর সমন্বয়কারী কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, ওমিক্রন দেশে ঢুকেছে। কোভিডও বরিশালে বেড়ে চলছে। এখন স্বাস্থ্য বিভাগ কিভাবে নিশ্চয়তা দিবে যে যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত নেই? তিনি বলেন, বরিশালের স্বাস্থ্য পরিচালক ও সিভিল সার্জনের দ্রুত আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পরীক্ষা করানোর উদ্যোগ নেয়া দরকার। এটি তাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব। সেটা না করা হলে আগামীতে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।

এব্যাপারে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেন বলেন, বরিশাল জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা একটু বাড়ছে। আক্রান্তদের পূর্বের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে বরিশালে এখনও ওমিক্রন পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন তারা স্বাস্থ্যবিধি পালন ও টিকা প্রদানের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *