বয়া হাতে নিয়ে অনেক যাত্রী নদীতে ঝাপ দেয়ার প্রস্ততি নেন

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : লঞ্চের সঙ্গে বাল্কহেডটির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দ হয়, যাত্রীরা আতংকিত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন। বয়া হাতে নিয়ে অনেক যাত্রী নদীতে ঝাপ দেয়ার প্রস্ততি নেন। নারী যাত্রীরা ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন। দূর্ঘটনার পর থেকে সারারাত যাত্রীরা উৎকন্ঠায় কাটিয়েছেন’। এমন ভীতিকর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ধলেশ্বরীর-মেঘনা মোহনায় দূর্ঘটনা কবলিত সুরভী- ৭ লঞ্চের যাত্রী বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধানর সম্পাদক আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমরা লঞ্চের ৫ শতাধিক যাত্রী বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় কীর্তণখোলা- ১০ লঞ্চে বরিশাল পৌছেছি।
আরিফ হোসেন বলেন, আমাদের চোখের সামনে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। সেটির ৬ জন ষ্টাফ প্রাাণ বাঁচাতে নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। আমিসহ কয়েকজন যাত্রী তাদের দিকে বয়া ছুড়ে দেই।
অপর এক যাত্রী বাবুগঞ্জের চাঁদপাশা গ্রামের মাজহারুল ইসলাম বলেন, বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়ার পর পরই অভিযান- ১০ লঞ্চের ভয়াবহতার কথা মনে করে কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সকল যাত্রীরা ছিলেন আতংকিত। সংঘর্ষের পরও লঞ্চটি চলন্ত অবস্থায় ছিল। ষ্টাফরা লঞ্চ চালু রেখেই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তা দেখছিলেন। এতে যাত্রীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। যাত্রীদের চাপে কর্তৃপক্ষ লঞ্চটি চরে নোঙ্গর করতে বাধ্য হন।
লঞ্চের নারী যাত্রী বরিশাল নগরের নবগ্রাম সড়কের বসিন্দা সালমা আক্তার বলেন, ‘এত ভয় আগে কখনও পাইনি। সব যাত্রীর চোঁখে-মুখে ছিল অজানা আতংকের ছাপ। শীতের মধ্যে সারারাত বারান্দায় দাড়িয়ে নির্ঘুম কাটিয়েছি। তবে আমরা নিরাপদে অন্য একটি লঞ্চে বরিশাল আসতে পেরেছি।
বুধবার রাত ১১টায় মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী-মেঘনা মোহনায় ঢাকা থেকে বরিশালগামী সুরভী- ৭ লঞ্চের সঙ্গে বালুবাহি একটি বাল্কহেডের সংঘর্ষ হয়। এতে সুরভী- ৭ লঞ্চের সম্মুখভাগ ফেটে যায়। ঢাকা সদরঘাট থেকে দূর্ঘটনাস্থলে গিয়ে কীর্তণখোলা- ১০ নামের একটি লঞ্চ সুরভী- ৭ লঞ্চের যাত্রীদের নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় বরিশাল ঘাটে পৌছেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ন পরিচালক ও বরিশাল নৌ বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান নিশ্চিত করেছেন, সব যাত্রীদের নিয়ে কীর্তণখোলা- ১০ লঞ্চটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বরিশাল ঘাটে পৌছেছে। দূর্ঘটনায় বাল্কহেডের একজন শ্রমিক নিঁখোজ রয়েছে। ৎ
সুরভী- ৭ লঞ্চের মলিক মো. রিয়াজুল কবীর বলেন, বাল্কহেডটি আলোছাড়া চলছিল। বেপরোয়া গতিতে এসে লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে লঞ্চটির সামনের একটি অংশ ফেটে যাওয়ায় বিকল্প লঞ্চে যাত্রীদের বরিশাল আনা হয়েছে। নৌপথে রাত্রীকালীন বাল্কহেড চলাচল অত্যন্ত বিপদজনক। রাতে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ হলেও কেউ তা মানছেন না।
বুধবার রাতে দূর্ঘটনা কবলিত সুরভী- ৭ লঞ্চের প্রধান মাষ্টার হুমায়ন কবীর বলেন, রাত ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী অতিক্রম করে মেঘনায় প্রবেশের মুখে মোহানায় বালুবাহি বাল্কহেডের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বাল্কহেডটি নিজেকে রক্ষায় সুরভী- ৭ লঞ্চের সামনে দিয়ে হঠাৎ আড়াআড়ি অতিক্রমের চেষ্টা করে। আকস্মিক বাল্কহেডটি আড়াআড়িভাবে সামনে পড়ে যাওয়ায় লঞ্চের গতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করতে পারেননি তিনি। ফলে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। ##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *