এক বছরে আলোচনায় মেয়র সাদিক

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার একবছর পূর্ন হলো আজ ৩০ জুলাই। যদিও তিনি মেয়র হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন আরও ৮৫ দিন পর ২৪ অক্টোবর। মেয়রের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে চলছে নগরীতে নানান আলোচনা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু বলেন, একবছর আগে নির্বাচিত হলেও মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ৯ মাস। সীমিত এ সময়ের মধ্যে মেয়রের সফলতা অনেক বেশী। তিনি বলেন, তার সবচেয়ে বড় সফলতা নগর ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের স্বচ্ছতা ফিরিয়ে এনেছেন। এখন সেবাপ্রত্যাশীদের নগর ভবনে এসে দূর্ভোগে পড়তে হয়না। দূর্ণীতি-অনিয়মের অভিযোগ থাকায় ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়।
বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করে কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে শতভাগ। বেতন বোনাস নিয়মিত করায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থকষ্টে ভূগতে হয়না। জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ প্রথমবারের মতো অস্থায়ী কর্মচারীদের উৎসব বোনাস দেয়ার প্রথা চালু করেছেন। নগরীতে শিশুদের বিনোদনের জন্য সুকান্ত বাবু শিশু পার্কসহ দুটি পার্ক চালু করা হয়েছে। সড়কের নিরাপত্তায় করা হয়েছে থ্রি-ডি জেব্র ক্রসিং। সদর রোডসহ কয়েকটি সড়ক সংস্কার করা হয়েছে ৫ বছরের গ্যারান্টিতে। যা সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে কখনও হয়নি বলে জনংযোগ কর্মকর্তা জানান।
মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে এ বাম নেতা বলেন, “ তার দয়িত্ব গ্রহনের পর নগরীতে দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। তবে নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচার-আচরনে উন্নয়ন হয়েছে। নগর ভবনে কাজের গতি বেড়েছে। নগরের মানুষ সেখানে গেলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গুরুত্ব দিয়ে তাদের কথা শোনেন ও কাজ করে দেন।” প্রবীন এ বাম নেতা বলেন, নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মেয়র ভীতি কাজ করে। ফলে সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আগের মতো টাকা নিতেও তারা ভয় পান। এটা ভাল লক্ষন। তিনি বলেন. মেয়র এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো উন্নয়ন কাজে হাত দিতে পারেননি। তবে কথা-বর্তায় মনে হচ্ছে তিনি ভাল কিছু করতে চাচ্ছেন।
তবে ভিন্নমত দিয়েছেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর আরেক প্রতিদ্বন্দ্বি ডা. মণিষা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘ভোটে যেমন জনগনের মতামতের প্রতিফলন হয়নি, তেমনি নগর ভবনে জনগনের মতামতের কোন মূল্য নেই। নির্বাচিত মেয়র শুরুতেই জনগনের হোল্ডিং ট্যাক্স দ্বিগুন চাপিয়ে দিয়েছেন। কর বৃদ্ধির নানা পায়তারা করছেন তিনি। সদর সংস্কার করে দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখানোর চেষ্টা চললেও নগরীর বর্ধিত এলাকাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানকার সড়কে কমপক্ষে দুইফুট খানাখন্দক’। ডা. মনিষা আরও বলেন, সরকারি দলের মেয়র হিসাবে জনগন যে উন্নয়ন আশা করেছিল তার সম্ভবনা খুবই কম দেখা যাচ্ছে। দূর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারনেই বরিশালে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
এব্যপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, তারা বিগত এক বছর করপোরেশনের প্রশাসনিক সংস্কার করেছেন। ইতোমধ্যে শহরের প্রধান সড়ক সংস্কার হয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্স এর যে বৈষম্য ছিল তা দুর করা হয়েছে। মশক নিধন, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ৩১ জুলাই বাজেট ঘোষনার পর নিজেস্ব পরিকল্পনায়তারা নগরীর উন্নয়ন করবেন। বর্ধিত এলাকার উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সমর্থ দেখতে হবে। বর্ধিত এলাকার অবস্থা ৬ মাসের মধ্যে পরিবর্তন হবে। এ নিয়ে কাজ চলছে। বর্ধিত অংশের আমুল পরিবর্তনঘটবে। এসব এলাকায় পানি ও বৈদ্যুতিক বাতি শতভাগ নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, একটি বছর গেছে এটি সত্য। তবে মেয়র তো এই দায়িত্বে পূর্বে ছিলেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *