ঈদ নিয়ে এলো একতা

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল:
প্রবাসে কারো সাথে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয় থাকেনা বা থাকার কথাও নয়। এখানে সবাই যে যার জায়গা বেশ প্রতিস্ঠিত। তারপরও মতভেদ ভিন্নতায় সবার সাথে সমান সম্পর্ক তৈরি হয়না। এটি মানব সৃষ্টির পরবর্তী থেকে হয়ে এসেছে। এখান থেকে সহজে উত্তরন সহজ নয়। কিন্তু কাজটি কঠিন হলেও স্বদিচ্ছা থাকলে অনেকটা সম্ভব। আর এই অসম্ভব কাজটিকেই সম্ভব করলেন গলওয়ের কিছু উদ্যমী নারী।

ঈদের দিনে সবাইকে এক ছাতার নীচে নিয়ে আসতে রমজানের আগে থেকেই এক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। গলওয়ের এ কাউন্টিতে চার শতাধিক বাংলাদেশির বসবাস। এমন কোন পরিবার নেই, যাদের কাছে ঈদের এ আয়োজনের আমন্ত্রণ পৌঁছেনি। আমন্ত্রণ পেয়ে তারাও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে
হাজির হয়েছেন উৎসবের এ দিনটিতে।

২০০৬ থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো বাংলাদেশি কমিউনিটি গলওয়েতে হয়েছিলো,তারাও কখনো সবাইকে একত্রে এভাবে মিলিত করতে পারেনি। যেটি পেরেছে অল্প কিছু নারী। একটি স্বদিচ্ছা যে সবাইকে একত্রিত করতে পারে, সেটিরই প্রমান করলেন ঐ সব আলোকিত নারীরা। গলওয়ের সল্টহিল জি,এ,এ ক্লাবে ঈদের দিনটি বাংলাদেশিরা যেভাবে পালন করেছেন, সেটি একটি ইতিহাস হয়ে রইলো।

এর আগে এত বাংলাদেশি জড়ো হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি এই প্রথম। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী দিনে একে অপরের মাঝে বন্ধনগুলো আরো মজবুত হবে বলে ধারনা এখানের বাংলাদেশিদের। এখানে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েরা ঈদের দিনটি যেভাবে ছোটাছুটি, গান, নাচ, খুনসুটি দিয়ে শেষ করেছে, তাতে আগামী দিনে এ উৎসবের মাত্রা যে আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

মতের ভিন্নতা, আদর্শের ভিন্নতা আমাদের মাঝে থাকবেই। কিন্তু বৈরি সম্পর্ক আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। আপনি, আমি, আমরা কেউ-ই শতভাগ শুদ্ধ মানুষ নই। কিন্তু আমাদের সবার মাঝে সুন্দর একটি মন বাস করে। আর এ সুন্দর ও মায়াময় মনের টের তখনি পাওয়া যায়,যখন আমাদের কোন বাংলাদেশি বাবা, মা, ভাই, বোন, সন্তান কেউ মারা যান।

আপনার, আমার সেই বিপদের সময় সান্তনার হাতের স্পর্শটি এই বাংলাদেশিদের কাছ থেকেই প্রথম আসে। আপনার সেই বেদনার সময় আপনার যেন রান্নাটাও করতে না হয়, সেজন্য রান্নাটাও আসে সেই বাংলাদেশিদের কাছ থেকে। বাংলাদেশে প্রিয়জন কেউ মারা গেলে এই বাংলাদেশিরাই বলে-“টাকা পয়সা নিয়ে চিন্তা করবেন না”

আমরা তো আছি! যাদের মাঝে এত মায়া থাকে, তাদের সাথে কেন আমরা বৈরিতা করবো! সবাই মিলেমিশে থাকলে আনন্দের মাত্রা যে বেড়ে যায় বহগুন, সেটি এবার ঈদে আরো একবার প্রমান হলো গলওয়েতে।

অনুস্ঠান শেষে তৃপ্তির যে হাসি নিয়ে ঘরে ফিরছে বাংলাদেশিরা, সেই হাসিতেই আরো শক্তিশালী হোক এখানের বাংলাদেশি কমিউনিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *