দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান, জীবন বদলে যাবে

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল:
করোনায় মানুষের শরীর ও মনের ওপর ধকল কম যায়নি। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আনন্দ,উল্লাস টনিকের কাজ করে। আর ঠিক এ কারনেই করোনার বিধি নিষেধ শিথিল হওয়ায় নানা অনুস্ঠানের আয়োজনের হিড়িক পরে আয়ারল্যান্ডে। এখন পর্যন্ত যতগুলো আয়োজন হয়েছে,সব আয়োজনেই সফল। এক কাউন্টির বিপরীতে অন্য কাউন্টির বাংলাদেশিরা আয়োজনে ভিন্নতা এনে ঝিমিয়ে পরা কমিউনিটিকে জাগ্রত করছেন।

এর জন্য তাদেরকে বাহবাও দিচ্ছেন অধিকাংশ বাঙালিরা। তবে কিছু দূর্বল মানসিকতার লোকজনের বিকারগ্রস্ত সমালোচনাও শুনতে হয় তাদের। একটি আয়োজনের পেছনের গল্পে অনেক পরিশ্রম,ত্যাগ থাকে। শুধু অর্থ দিয়ে একটি আয়োজন সফল হয়না। এটিও সত্য অর্থ ব্যাতীত একটি আয়োজন সম্ভবও না। আর এ জন্যে যারা অনুস্ঠানে আসেন,তারা প্রত্যেকেই নির্ধারিত ফি দিয়েই আসেন। কারো একক তহবিল থেকে অর্থ ব্যায় কেউ-ই করেননা।

এ সব আয়োজনে অনেক সময় আয়োজকদের পকেট থেকেও বাড়তি টাকা যায়,আবার অনেক সময় উদৃতও থাকে। তবে ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্যে এ আয়োজন কেউ করেনা। সবাই মিলেমিশে আনন্দ ভাগাভাগি-ই মূল উদ্দেশ্য থাকে। সবচেয়ে বড় যে লাভটি হয় এ আয়োজনে তা হলো- নতুন অনেক পরিবারের সাথে পরিচয়ে সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। প্রবাসে যেটি আমাদের খুব বেশি দরকার। তবে সব আয়োজনে কিছু হীনমন্যতায় ভোগা রোগী এসে থাকেন,যাদের মূল কাজ দোষ খুঁজে বেড়ানো। এবং কখনো কখনো কুৎসা রটানো থেকে ঝগড়া লাগিয়ে দেন।

হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায় কখনো কখনো। আয়োজকরা এই হাতাহাতি দেখেও পুলিশ না ডেকে সবসময়ই উদারতার পরিচয় দেয়। দেশের বদনামের কথা ভেবে এ কাজটি তারা করেননা। এটি তাদের বিনয়,দূর্বলতা নয়। বাংলাদেশের কোন আয়োজনে পুলিশ এসে কাউকে ধরে নিয়ে গেলে,সেই লজ্জা পুরো কমিউনিটিতেই পরে। আর এর প্রভাব পরবে আগামী যে কোন আয়োজনে। একদিকে কেউ দায়িত্ব নিয়ে কোন অনুস্ঠানের আয়োজন করবেনা,আরেকদিকে বাংলাদেশিদেরকে কেউ আর কোন হল ভাড়া দিবেনা। সভ্য একটি দেশে অসভ্যের আচরন বড়ই বেমানান। হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া অধিকাংশ বাংলাদেশিরা যেখানে প্রান ভরে উপভোগ করেন সহায়তার হাত বাড়িয়ে,সেখানে এসব নেতিবাচক চিন্তাধারার মানুষদের এড়িয়ে চলতে হবে

আয়োজক সহ শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশিদের। দু’একজনের জন্য পুরো কমিউনিটি যেন বিতর্কিত না হয়,সেজন্য সতর্ক হতে হবে সবার। একটি আয়োজনে সব বাংলাদেশিদের দাওয়াত দেয়া সম্ভব নয়,তাদের সাধ থাকলেও সাধ্যের সীমাবদ্ধতায় আটকে যায়। এটি নিয়েও অনেকে অসন্তোষ থাকেন। আবার কিছু কিছু মানুষ এর মাঝে আয়োজকরা টাকা বানিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন। যে কোন কাজের জন্য স্বচ্ছতা থাকতে হয়, এটি সত্য। তবে কাউকে হেয় করার জন্য কিছু বলে নিজেকে বড় আজও কেউ হয়নি৷ কমিউনিটির প্রতিটি লোক সন্মানিত,এটি মাথায় রেখে ভাষার ব্যাবহার করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে। আর যদি এ সব আয়োজনে অনেক লাভই হয়,তাহলে এ ব্যাবসায় ঐ সব সমালোচদেরও জড়িয়ে পরা উচিত।

শুধু ঘরে বসে থেকে দূর্বল সমালোচনায় ফলাফল কিছু হবে বলে মনে হয়না। তবে যে কোন আয়োজনে এখন থেকে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে ইনফর্ম করে আয়োজন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেক বাংলাদেশি। এতে করে নির্বিঘ্নে অনুস্ঠান পালন অনেক সহজ হবে বলেও মনে করেন তারা। আজ আপনি এক অনুস্ঠানে ঝামেলা করবেন,কাল আপনার অনুস্ঠানে আরেকজন করবে,এভাবে তো সম্প্রীতি হয়না। আমাদের কারো সাথে ব্যাক্তিগত কোন শত্রুতা থাকলে,সেটি নিজেদের মাঝেই রাখি। কমিউনিটির বাকী লোকজনের সামনে আমাদের নগ্ন চেহারাটা না দেখানোটাই শ্রেয়। ভদ্র লোকের বসবাসের নগরীতে উদ্ভট আচরনের মানুষ আদৌ কি শোভা পায়! আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের যে সুনাম রয়েছে,সেই সুনাম যেন অতি উৎসাহী অল্প কিছু বিবেকহীন মানুষের জন্য ক্ষুন্ন না হয়।

চিন্তাধারায় এ জাতীয় লোকদের পরিবর্তন নিয়ে না আসতে পারলে,সমাজে অবহেলিত হয়েই থাকতে হবে এদের। যেটি আমরা কেউ-ই চাইনা। আমরা চাই একে অপরের আয়োজনে সকল বাংলাদেশিরা গাইবে শুধু সাম্যের গান। আর এই সাম্যের সুরে ভেসে যাবে সকল অসঙ্গতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *