নাগরিক রিপোর্ট : ৫ মিনিট পরেই মাধব শীলদের (৫০) গন্তব্যে উজিরপুরের ইচলাদি ষ্টেশনে পৌছাতো যমুনা লাইন পরিবহন। গাড়ির পেছনের ছিটে বসা ছিল মাধবসহ তার সঙ্গী অপর ৫ জন। গাড়ি থেকে নামার পূর্ব প্রস্ততিতে তারা আসন ছেড়ে সামনের দিকে এগুতে থাকেন। সবার সামনে ছিলেন মাধব। বাসটি গাছের ওপর আছড়ে পড়লে ৬ জনের মধ্যে তিনি বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হন। হাসপাতালে আনার পর মারা যান তিনি। সঙ্গী ৫ জনের মধ্যে গুরুতর ৩ জন বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিমে) চিকিৎসাধীন আছেন।
রোববার প্রত্যুষে বরিশালের উজিরপুরের সানুহারে দূর্ঘটনাকবলিত যমুনা লাইন পরিবহনের যাত্রী ছিলেন নিহত মাধব শীল ও তার ছেলে অনীক শীল (১৮), জ্ঞাতি চাচাত ভাই দিনেশ শীল (৫০) ও তার ছেলে সুদিপ্ত শীল (১৫), মনোরঞ্জন শীল (৪৫) এবং বিলাস চন্দ্র শীল (১৫)। উজিরপুরের শিকারপুরে মুন্ডুপাশা গ্রামে একই বাড়ির এই মানুষগুলো ফরিদপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে বাড়ির কাছে ইচলাদী ষ্টেশনে পৌছার ৫ মিনিট আগে বাস দূর্ঘটনায় প্রাণ হারান মাধব শীল। গুরুতর আহত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার ছেলে অনীক শীল, দিনেশ শীল ও মনোরঞ্জন শীল।
অলৌকিভাবে অক্ষত অবস্থায় থাকা বাসযাত্রী দুই কিশোর সুদিপ্ত শীল ও বিলাস চন্দ্র শীল জানান, শনিবার সকালে কদমবাড়িতে পৌছান তারা। বাড়িতে ফেরার জন্য রাত সাড়ে ৩টায় মাদারীপুরের টেকেরহাট ষ্টেশণ থেকে যমুনা লাইন পরিবহনে ওঠেন। সকলেই ছিলেন ঘুমের ঘোরে।
দুই কিশোর জানান, বাস গন্তব্যের কাছাকাছি পৌছায় তাদের ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয়। তারপর ছিট ছেড়ে ৬ জন সারিবদ্ধভাবে বাসের সামনের দরজার দিকে এগুচ্ছিলেন। বিলাস শীল বললেন, হঠাৎ দেখতে পান বাসটি বড় একটি ঝাকুনী খেয়েছে। এরপরে বাক নিয়েই কিসের ওপর যেন গিয়ে পড়ে বাসটি। বিলাস ও সুদিপ্ত জানান, তারা নিচে পড়ে গেলে বাসের সীট তাদের শরীরের ওপর পড়ে। যে কারনে তারা রক্তাক্ত জখম হননি। বিলাস জানান, তিনি মাধব শীলকে টেনে নিচ থেকে বের করেন।
হাসপাতালের রেজিষ্ট্রারে দেখা গেছে, সকাল পৌনে ৯টায় মাধব শীল মারা যান। দায়িত্বরত নার্সরা জানান, ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর মৃত্যু ঘটেছে। তিনি মাথায় রক্তাক্ত জখম হন।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ভান্ডারিয়াগামী যমুনা লাইন পরিবহন নামক বাসটি রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় বরিশালে উজিরপুর উপজেলার সানুহার নামক স্থানে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সড়কের পাশে মেহগণি গাছের ওপর আছড়ে পড়ে। এ দূর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত ২৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ##
২০২২-০৫-২৯