নাগরিক রিপোর্ট:
ঐতিহ্যবাহী সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র-শিক্ষকের চলাচলের পকেট গেট দেয়াল দিয়ে আটকে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রোববার এ গেটটিতে দেয়াল দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ছাত্রদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষকও হতাশার সুরে জানিয়েছেন, বছরের পর বছর বৌদ্ধ পাড়ার এ গেটটি দিয়ে চলাচল করতেন অতি সহজে। পাশাপাশি অশ্বিনী কুমার ছাত্রবাসের পিছনের একটি গেটও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পকেট গেট সংলগ্ন কলেজের বিশাল পুকুরে অবৈধভাবে লিজ দিয়ে মাছ চাষ নির্বিঘ্ন করতে গেটটিতে দেয়াল দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। ওই পুকুরে মাছ চাষের সঙ্গে প্রভাবশালীরা সম্পৃক্ত।
বিএম কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ মুন্না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেসবুকে উল্লেখ করেন, ‘হোস্টেলের ছাত্ররা যাতে বাহিরে খেতে যেতে না পারে সেইজন্য পকেট গেটে ওয়াল করার অনুমতি দিলেন! কোন মহলকে খুশি করতে গিয়ে ২৮,০০০ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তামাশা করতে পারেন না। বৈদ্যপাড়া, কলেজ এভিনিউ মেসে যে সকল ছাত্র- ছাত্রীরা থাকে তারা কি ওয়াল বেয়ে কলেজে যাবে? নাকি ২০/৩০ টাকা রিকসা ভাড়া দিয়ে? আপনি চাপে পড়ে করছেন, আবার শিক্ষার্থীরা বিরক্ত হয়ে ঠিকই একদিন ভেঙে ফেলবে।’
স্থানীয় ২০নং কাউন্সিলর ও কলেজের সাবেক ছাত্র জিয়াউর রহমান বিপ্লব এর প্রতিক্রিয়ায় উল্লেখ করেন, ‘বিএম কলেজ কে মহিলা কলেজ বানানো উচিৎ।’
কলেজর একজন সহযোগী অধ্যাপক এ প্রসঙ্গে বলেন, ২০ বছর ধরে বৌদ্ধপাড়া সংলগ্ন পকেট গেট দিয়ে তিনি যাওয়া আসা করতেন। কাল গিয়ে দেয়াল দেখে হতাশায় ফিরে এসেছেন। বৈদ্ধপাড়া নিবাসী একজন মুসল্লী বলেন, এই পকেট গেট দিয়ে বিএম কেন্দ্রীয় কলেজের মসজিদে অনেকেই নামাজে যান। ছাত্ররা নানা কাজে বের হন। এখন গেটটি দেয়াল দিয়ে বন্ধ করায় সমস্যাই দেখা দিল।
বিএম কলেজের সাবেক অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, প্রতিক্রিয়া তো আমারও আছে। এটা কি ফিশারিজ ফার্ম। মাছ উৎপাদনের স্বার্থে কি পকেট গেট বন্ধ হলো। এই গেটটি তৈরি হয় বহু বছর আগে শিক্ষক কোয়াটার্স এর অর্থায়নে। ওখান থেকে আসা যাওয়া করলে কি ক্ষতি! এ ঘটনায় তিনি দুখিত, লজ্জিত।
এব্যপারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, নিরাপত্তার কারনে পকেট গেট বন্ধ করা হয়েছে। মাদকসেবী, বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। কলেজের ৯টি গেট কিভাবে নিয়ন্ত্রন করবেন। ছাত্র-ছাত্রীদেরও দাবী আছে পকেট গেটটি বন্ধ করার।