নাগিরিক রিপোর্ট ॥ ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম-অসততার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যাত্রী জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে নিচ্ছে এ রুটের লঞ্চ মালিকরা। বিশেষ করে বছরের দুটি ঈদ উৎসবে নানান কৌশলে কয়েকগুন মুনাফা অর্জনের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। আসন্ন ঈদ উল আয্হা উপলক্ষে সোমবার বরিশাল মেট্রেপলিটন পুলিশর ঈদোত্তর প্রস্ততি সভায় এসব অভিযোগে তোপের মুখে পড়েন লঞ্চ মালিকরা। সভার প্রায় অর্ধেক সময় আলোচনা হয়েছে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ মালিকদের অসততা নিয়ে। নগরীর চাঁদমরিস্থ পুলিশ অফিসার্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রস্ততি সভায় সভাপতিত্ব করেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবউদ্দিন। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, লঞ্চ ও বাস মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি, পশুরহাটের ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের প্রতিনিধিরা মতবিনিময় অংশগ্রহন করে ঈদ উল আয্হা নিয়ে তাদের প্রস্ততির কথা জানান।
লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কেবিনের টিকেট কালোবাজারে বিক্রি, নদীর মধ্যে একাধিক লঞ্চের মধ্যে আগে যাওয়ার প্রতিযোগীতা, যাত্রী নিরাপত্তায় আনসার না রাখা ও যাত্রীদের অধিক মূল্যে মানহীন খাবার পরিবেশন।
বিআইডব্লিউটি’র বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় একটি লঞ্চেও আনসার রাখা হয়না। বরঞ্চ তাদের কর্মচারীদের আনাসারের পোশাক পড়িয়ে নিরাপত্তাকর্মী নামে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারনা করা হচ্ছে। লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে টিকেট কালোবাজারীর অভিযোগ করেন বন্দর কর্মকর্তা।
সিটি করপোরেশনের স্যানিটরী ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তারা একাধিকবার সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন লঞ্চের খাবারের মান ভালনা। মূল্য রাখা হয় অনেক বেশী। এর কারন জানতে চাইলে ক্যন্টিনের দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন, প্রতিটি রাউন্ড ট্রিপের জন্য মালিকপক্ষকে ১৫ হাজার টাকা ক্যান্টিন ভাড়া দিতে হয়।
সভায় একাধিকজন অভিযোগ করেন, মাঝনদীতে লঞ্চগুলো যেভাবে আগে যাওয়ার প্রতিযোগীতা করে তাতে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ প্রসঙ্গে বন্দর কর্মকর্তা বলেন, প্রতিযোগীতায় লিপ্ত অভিযুক্ত নৌযানের মাষ্টার-ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যেগ হলে উল্টো তাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেন লঞ্চ মালিকরা।
এসব অভিযোগের জবাবে কীর্তণখোলা লঞ্চের মালিক ফেরদৌস বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের নিরাপত্তা দিতে না পারায় তারা লঞ্চে আনসার রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। পরে সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানীর মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ৬ জন আনসারের প্রতিজনকে ১৮-২০ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। এত টাকা ব্যয়ের সামর্থ মালিকদের নেই, তাই আনসার রাখছেন না। টিকেট কালোবাজারী ও ষ্টাফ কেবিন ভাড়া দেয়ার দায় চাঁপান নৌযান শ্রমিকদের ওপর। এক পর্যায়ে মালিকরা বলেন, শ্রমিকদের তারা নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন না।
২০১৯-০৮-০৫