নাগরিক রিপোর্ট : অর্থ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে চিকিৎসা কেন্দ্রটি দুইবছর যাবত বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এখনও জনপ্রতি ২০ টাকা করে স্বাস্থ্য ফি নেয়া হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে ৭ সহ¯্রধিক শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় কলেজে ছাত্র-শিক্ষকদের কেউ অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ারও সুযোগ নেই। তবে স্বাস্থ্যসেবা ফি বাবদ বছরে শিক্ষার্থীদের কাছ কয়েক লাখ টাকা আদায় হচ্ছে ঠিকই।
স্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধের জন্য কলেজ অধ্যক্ষ শিক্ষক পরিষদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অপরদিকে কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক আল আমিন সরোয়ার বলেছেন তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
এদিকে দুইবছর আগে বন্ধ চিকিৎসা কেন্দ্রে এখনও সেখানে সর্বশেষ খন্ডকালীন চিকিৎসক ডা. মনীষা চক্রবর্তীর সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে। এনিয়ে ডা. মনিষা কলেজ কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোষ্ট দেন। ডা. মনিষা বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা সদস্য সচিব। তিনি বরিশাল নগর রাজনীতিতে সরব মুখ।
ডা. মনিষা জানান, তিনি ২০১৫ সালে বিএম কলেজে খন্ডকালীন চিকিৎসক হিসাবে যোগ দেন। সপ্তাহে ৩দিন কর্মস্থলে যাওয়ার নিয়ম থাকলেও নিজ দায়িত্ববোধ থেকে আরও একদিন যেতেন ছাত্রীনিবাসে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে অধ্যক্ষ কার্যালয়ে তাকে ডেকে জানানো হয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তারা বন্ধ করে দেয়ার মৌখিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কলেজের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে নবগঠিত শিক্ষক পরিষদ একমত জানিয়েছে।
ডা. মনিষা জানান, কিছুদিন আগে কলেজের একটি গ্রপ পোষ্টে দেখেন চিকিৎসকের কক্ষের সামনে তার নামের সাইনবোর্ডটি এখনও লাগানো রয়েছে। বিষয়টি তার জন্য বিব্রতকর। সাধারন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজ প্রশাসনের এটা প্রতারনার সামিল। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কলেজ কর্তৃপক্ষের উচিত চিকিৎসা কেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষনা করা এবং তার নামের সাইনবোর্ড খুলে ফেলতে হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক আল আমিন সরোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক পরিষদ চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধের পক্ষে মত দেয়নি। তখন করোনা প্রাদুর্ভাবে কলেজ দীর্ঘ মাস বন্ধ ছিল। তাছাড়া ডা. মনীষা রাজনীতি করায় সপ্তাহে ৩দিন কর্মস্থলে আসতেন না। শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হতো। এসব কারনে তখন দুজন চিকিৎসককেই আসতে বারন করা হয়েছিল। আল আমিন সরোয়ার বলেন, চিকিৎসা কেন্দ্রটি পূনরায় চালুর জন্য একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. দেলোয়ার হোসেন ও ডা. মনিষা চক্রবর্তী কলেজের চিকিৎসা কেন্দ্রে খন্ডকালিন দায়িত্ব পালন করতেন। তারা দুজনই যথাযথ দায়িত্ব পালন করতেন না। করোনার সময়ে অর্থ সংকট থাকায় তাদের দুজনকেই ডেকে না আসার জন্য বলা হয়েছিল। চিকিৎসা কেন্দ্রটি নতুন করে চালুর জন্য নূন্যতম সম্মানিতে একজন চিকিৎসক খোঁজা হচ্ছে।##