ভারতে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরা

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক:
আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দলের কথা গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। কিন্তু ওয়ানডেতে ভারতের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেই আত্মবিশ্বাসের বাস্তব প্রয়োগ দেখানোই ছিল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু জ্যোতিরা কথা রেখেছেন। জ্যোতির দায়িত্বশীল ইনিংস আর মারুফা আক্তারের তেজদীপ্ত বোলিংয়ে পুড়েছে ভারত।

মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ৪০ রানে হারিয়ে সিরিজ শুরু করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম জয় এবং এই সংস্করণে নিজেদের মাঠেও তাদের বিপক্ষে প্রথম জয়।

ভারতকে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের প্রেরণা পেয়েছিল বাংলাদেশ। অল্প পুঁজি নিয়েও জেতা সম্ভব করে দেখিয়েছে স্বাগতিকেরা। বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় মিরপুরে টস জিতেও বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টিও হয়েছিল। কিন্তু ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটাররা সেভাবে অবদান রাখতে পারেননি। অধিনায়ক জ্যোতি খেলেছিলেন সর্বোচ্চ ৩৯ রানে ইনিংস। যার সৌজন্যে ডিএল মেথডে ভারতকে ১৫৪ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ।

স্বল্প পুঁজি নিয়েও লড়াইটা জমিয়ে তোলেন পেসার মারুফা ও লেগ স্পিনার রাবেয়া খান। ৬১ রানেই ভারতের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করে দেন। ভারতের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ রান করেন দীপ্তি শর্মা। দুই ওপেনার প্রিয়া পুনিয়া ও স্মৃতি মান্ধানাকে ফিরিয়ে বধের শুরুটা করেন মারুফা।

ষষ্ঠ উইকেটে আমানজত কৌর ও দীপ্তি জুটি বড় করা চেষ্টা করেন। ১৫ রানে আমানজতকে ফিরিয়ে ৩০ রানের জুটি ভেঙে দেন মারুফা। এরপর সেভাবে আর কেউ উল্লোখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি। ৩৫.৫ ওভারে ১১৩ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।

৭ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মারুফা। ওয়ানডেতে এটাই তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। রাবেয় শিকার করেছেন ৩ উইকেট।

এর আগে সকাল থেকে মিরপুরের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনাও। ইনিংসের ১৬ তম ওভারে বৃষ্টি নেমেই পড়ল। ১ ঘণ্টার বেশি সময় বৃষ্টির পর খেলা আবারও শুরু হয়, তবে ডিএল মেথডে ম্যাচের পরিধি ৬ ওভার কমিয়ে নির্ধারণ হয় ৪৪ ওভারে।

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪৩ ওভারে ৯ উইকেটে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১৫২ রান। বৃষ্টি আইনে ১ রান বেড়ে হয় ১৫৩ রান। শরীর খারাপ হওয়ায় ব্যাটিংয়ে করতে পারেননি স্বর্ণা আক্তার। ভারতের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ছাড়া কেউ সেভাবে লড়তে পারেননি।

পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশকে ১৪ রানের বেশি তুলতে দেয়নি ভারতের বোলাররা। ওপেনার শারমিন আক্তার ১৮ বল খেলে কোনো রান করেই ড্রেসিংরুমে ফেরেন। আরেক ওপেনার মুরশিদা খাতুন ৩০ বলে ১৩ রানে আউট হন।

তৃতীয় উইকেটে জ্যোতি ও ফারজানা হক পিংকি বাংলাদেশের রানের চাকা সচল করে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ইনিংসের ২১ তম ওভারে আমানজত কৌর ফারজানাকে ফিরিয়ে ভারতকে ব্রেকথ্রু এনে দেন। ৪৫ বলে ২৭ রান আসে ফারজানার ব্যাট থেকে। তৃতীয় উইকেটে ৭৪ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন জ্যোতি ও ফারজানা।

এরপর নেমে রিতু মণিও ফেরেন ৮ রানে। ৩১ তম ওভারে এলবিডব্লুতে আমানজত ফেরান জ্যোতিকেও। ৬৪ বলে ৩৯ রান করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পরে সুলতানা খাতুনের ১৬, রাবেয়া খানের ১০ ও ফাহিমা খাতুনের ১২ রানের ইনিংসের সৌজন্যে দেড়শো পার করে বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *