নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের (শেবাচিম) এক ছাত্রী র্যাগিং এর শিকার হয়েছেন। তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে দুই দফায় র্যাগিং এর কারনে অসুস্থ হয়ে পড়লে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে শনিবার সাংবাদিকরা চিকিৎসকদের হামলার শিকার হয়েছেন।
জানা গেছে কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী নিলীমা জাহান জুই ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছেন তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। তাকে গত বুধবার রাতে দাড় করিয়ে রাখা এবং মানোসিক নির্যাতন করেছে জুই এর নেতৃত্বে একদল সিনিয়র ছাত্রী। এতে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ওই রাতেই শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করা হয় কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে।
গতকাল শনিবার খবর পেয়ে বরিশাল মেডিকেল কলেজে সাংবাদিকরা গেলে সেখানে অধ্যক্ষর নেতৃত্বে ৭ সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশাসনিক ভবনের সবকটি ফটক আটকে রেখে সাংবাদিকদের অবরূদ্ধ করে রাখা হয়। বেলা ১২টায় এ ঘটনা ঘটার পর পুলিশ গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, ঘটনার সময় কমিউনিটি মেডিকেল বিভাগের ডা. বাকি বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডা. পবিত্র কুমার হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা কলেজের কর্মচারী ও শ্রেণীকক্ষ থেকে ছাত্রদের ডেকে এনে হামলার নির্দেশ দেন।
ঘটনার পর বরিশালের গনমাধ্যমকর্মীরা শেবাচিম অধ্যক্ষর কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি সামাল দিতে অধ্যক্ষ ডা. ফয়জুল বাশার সাংবাদিক প্রতিনিধিদের নিয়ে বেলা দেড়টার দিকে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে অধ্যক্ষর ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ দাবী করেছেন, হামলার নেতৃত্ব দেয়া ডা. বাকি বিল্লাহ ও ডা. পবিত্র কুমারকে শেবাচিম থেকে বদলী করতে হবে।
ঘটনার শিকার সাংবাদিকরা বলেন, র্যাগিংয়ের শিকার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অভিবাবকসহ শনিবার অধ্যক্ষর কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যান। খবর পেয়ে হামলার শিকার সাংবাদিকরাও সেখানে যান। তারা ঘটনার শিকার ছাত্রীর বক্তব্য নেয়ার সময় দুই জন চিকিৎসকের নেতৃত্বে অতর্কিত ৪-৫ জন হামলা চালায়। সাংবাদিকদের মারতে মারতে অধ্যক্ষ কার্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়।
এশিয়ান টেলিভিশনের ফিরোজ মোস্তফা বলেন, অভিযোগকারী ছাত্রী ও তার অভিবাবকদের সামনেই হামলা চালানো হয়েছে। হামলা শুরুর পর কর্মচারী ও শ্রেনীকক্ষ থেকে ছাত্রদের ডেকে আনতে অন্য কর্মচারীদের নির্দেশ দেন নেতৃত্ব দেয়া দুই চিকিৎসক। কর্মচারী ও ছাত্ররা ভবন থেকে বের হওয়ার সবকটি ফটক আটকে দিয়ে সাংবাদিকদের অবরূদ্ধ করে ফেলে বলে জানান তিনি।
এব্যপারে অধ্যক্ষ ডা. ফয়জুল বাশার সাংবদিকদের বলেন, র্যাংগিয়ের শিকার অভিযোগকারী ছাত্রী মানসিক রোগী। তার মাও অসুস্থ। দুজনকে চিকিৎসার জন্য একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখানে সাংবাদিকরা ঢুকে বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করে। আমি তখন দায়িত্বরত শিক্ষকদের নির্দেশ দেই পরে এসে বক্তব্য নেয়ার জন্য। তবে শিক্ষক ও সাংবাদিদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারনে এ ঘটনা ঘটেছে।