শতাধিক দখলদার গিলে খাচ্ছে লাকুটিয়া খাল

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল নগরের ঐতিহ্যবাহী লাকুটিয়া খাল দখল আর দুষনে মৃতপ্রায় অবস্থায় পরিনত হয়েছে। ৮ কিলোমিটারের খালটির একাংশ দখল নিয়ে ভাড়া দিচ্ছে একটি চক্র। নগরের মড়কখোলা পুল থেকে শুরু হওয়া খালের অপরপ্রান্ত মিশেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্ধা নদীতে। এ খালের নগরের মধ্যের অংশে শতাধিক দখলদার রয়েছে। চলতি মাসে নতুন করে লাকুটিয়া খাল দখল করে এক ডজন নতুন দোকান ঘর গড়ে তোলা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।

বরিশাল নগরীর মড়কখোলার পুল থেকে বাবুগঞ্জ উপজেলা সদরে যাওয়ার প্রশস্ত সড়কটি হচ্ছে লাকুটিয়া সড়ক। সড়কের পূর্বপাশ ঘেষে বয়ে যাওয়া খালের নামও হয়েছে লাকুটিয়া খাল। এক সময় এই খাল দিয়ে নৌকা চলতো। এখন তাতে কিছুদুর পরপর সাকো, বাধ। বানিজ্যিক এলাকা হওয়ায় নগরের মরকখোলার পুল থেকেই দখল শুরু হয়েছে। পুল ঘেষে খালে স্থাপিত প্রথম দুটি দোকানের একটি ভাতের হোটেল অপরটি চায়ের দোকান। এর পরের ৩টি দোকানঘরের নতুন টিন দেখে বোঝা যায় সম্প্রতি এই ঘরগুলো তোলা হয়েছে।

স্থানীয়ারা জানিয়েছেন, গত ১২ জুন সিটি নির্বাচনের পর তোলা হয় ৩টি নতুন ঘর। ঘর দুটির মালিক সবুজ ও কাওছার বিগত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সমর্থক হিসাবে পরিচিত। ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে প্রতিটি ঘর ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে। অপর ৩টি ঘর উত্তোলনকারীরা সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে নৌকারকর্মী হিসাবে কাজ করেছেন। এরমধ্যে একটি ঘরে বরিশাল জেলা অটো টেম্পু আলফা, মাহিদ্র টেক্সিক্যাব মিশুক এলপিজি সিএনজি ও থ্র্হিুইলার চালক শ্রমিক ইউনিনের সাইবোর্ড সাটানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, টেম্পু খলিল নামক একজন ঘরটি তুলেছেন। অপর দুটি ঘরের মালিক বেল্লাল ও মিজু।

মড়কখোলার পুল থেকে নগরের শেষ সীমনা মহামায়ার পুল পর্যন্ত এমন ১০ থেকে ১২টি চকচকে টিনশেড ঘর দেখা গেছে। ফাঁকা জায়গা পেয়ে নতুন ঘরগুলো তোলা হয়েছে।
লাকুটিয়ার বাসিন্দা সৈয়দ মোশাররফ হোসেন বলেন, এই খাল দিয়ে নৌকায় চরে এক সময় তারা বরিশাল শহরে আসতেন। খালের পানি ফসলি জমির অন্যতস উৎস ছিল। সন্ধ্যা আর আড়িয়াল খাঁ নদ দিয়ে শহরে মালামাল প্রবেশ করতো লাকুটিয়া খালের মাধ্যমে। কিন্তু খালটি দখল আর দুষনে মরে যাচ্ছে।

বিসিসির স্থানীয় ১ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লা এ প্রসঙ্গে বলেন, গত সিটি নির্বাচনে তফসিল ঘোষনার পরই ঘর তোলার হিড়িক পড়ে। তখন কাউন্সিলর না হয়েও তিনি মৌখিকভাবে অনেককে নিষেধ করেছেন। কিন্তু কেউ শুনেনি। এমনটা চলতে থাকলে খালটি টিকেয়ে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, নতুন পরিষদ দায়িত্ব নিলে তিনি লাকুটিয়া খাল দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিবেন।

নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, লাকুটিয়া খালের উপর কয়েক বছর আগে শতাধিক অবৈধ দখলদারের তালিকা করেছিলেন। কোন দখলদারই উচ্ছেদ হয়নি। নতুন করে খাল দখল শুরু হয়েছে । এতে খালটি এক সময়ে মরে যাবে। এতে নগরে জলাবদ্ধতা আরও বাড়বে। তিনি অনতিবিলম্বে লাকুটিয়া খাল দখলমুক্ত করার দাবী জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *