আইএইচটিতে আন্দোলন দমাতে ছাত্রীদের পেটালেন ছাত্রলীগ কর্মীরা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) শিক্ষিকার বিরুদ্ধে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে ছাত্রীদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সেখানকার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। ইনস্টিটিউট এর ছাত্রী হোস্টেল থেকে গতকাল মঙ্গলবার অসুস্থ অবস্থায় মৌ আক্তার নামে এক ছাত্রীকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে শিক্ষিকা সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সানজিদা শহীদ এর পদত্যাগ সহ হয়রানি বন্ধের দাবীতে সোমবার মধ্যরাত থেকে আন্দোলন শুরু করে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

ওই আন্দোলন দমাতে ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রীদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ ডা: শানজিদা নামে ওই শিক্ষিকাকে অন্যত্র বদলির সুপারিস সহ ছাত্রী পিটানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আইএইচটির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ক্যাম্পাসে বোরকা পরার কারণে কয়েকজন ছাত্রীকে কটুক্তি করেন শিক্ষিকা ডাঃ সানজিদা। যারা বোরকা পরিধান করে আসে তাদের চিহ্নিত করার জন্য তিনি তালিকা তৈরি করেন। এভাবে ওইসব ছাত্রীদের হায়রানী করা হয় বলে অভিযোগ ছাত্রীদের। আন্দোলনরতরা আরও জানান, হিন্দু ছাত্রীদের নিয়েও অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করেন শিক্ষিকা ডাঃ সানজিদা।

এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত ১২টা থেকে কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন ছাত্রীরা। তারা ওই শিক্ষিকার পদত্যাগ দাবী করে শ্লোগান দেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নেয়ার আশ^াস দেন বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল মারুফ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে অধ্যক্ষ ডা. মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু সাক্ষরিত একটি চিঠি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হয়।

এদিকে আন্দোলনের জেরে আইএইচটি ছাত্রলীগ আহ্বায়ক আবু ইউসুফ ইফতির সঙ্গে কথা কথা কাটাকাটি হয় কয়েকজন ছাত্রীর। এসময় ইফতি ওই ছাত্রীদের কয়েকবার মারধর করতে যান। এ ঘটনার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ছাত্রী হোস্টেলে আন্দোলনরত ছাত্রীদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেত্রীরা। পরে হল সুপার ও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় মৌ আক্তার নামে এক ছাত্রীকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে।

তবে ছাত্রী হোস্টেল সুপার ডা. শামীমা আক্তার বলেন, অসুস্থ ছাত্রীকে পেটানো হয়নি। না খেয়ে আন্দোলন করার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ওই ছাত্রী। অন্যরা সবাই নিরাপদে আছে। ছাত্রলীগ আহ্বায়ক আবু ইউসুফ ইফতিও হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তবে ইফতিকে গতকাল ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের উপর চড়াও হতে দেখা গেছে।

এব্যপারে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) এর অধ্যক্ষ ডা. মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে তারা মহাপরিচালক বরাবর ডাঃ সানজিদা শহীদ নামে ওই শিক্ষককে বদলীর জন্য চিঠি দিয়েছেন। এছাড়া ছাত্রী হলে কে বা কারা হামলা করেছে- এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *