ভরাট চলছে শতবর্ষী দুই জলাশয়, বিক্ষুব্ধ পরিবেশবাদীরা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল নগরের দুটি শতবর্ষী জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মানের পায়তারা করছে প্রভাবশালীরা। এর একটি নগরের ১৯ নং ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোডে পরিবার পরিকল্পনার আওতাধীন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের পুকুর এবং অপরটি ২৯ নং ওয়ার্ডের কাশিপুরের সীতারামের দীঘি। গত কয়েকদিন ধরে রাতের আধারে জলাশয় দুটি ভরে ফেললেও পরিবেশ অধিদপ্তর দৃশ্যমান কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ বরিশালের পরিবেশবাদীরা।

এদিকে নগরের ১৯ নং ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোডে পরিবার পরিকল্পনার আওতাধীন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে সোমবার সংশ্লিস্ট স্থানে মানববন্ধন করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদীরা।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতাল রোডের মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ৩৩ শতাংস বিশিস্ট পুকুরের অর্ধেকের বেশি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। সেখানে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বহুতল ভবন করা হবে। জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ওখানে একটি ৫ তলা ভবন হবে। যেখানে ৫০ বেডের হাসপাতাল ছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও সদর উপজেলা ভবন নির্মিত হবে।

জানতে চাইলে নদী খাল বাচাঁও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, পরিবেশ আইন ২০০০ অনুযায়ী কোনো পুকুর বা জলাশয় ভরাট দণ্ডনীয় অপরাধ। হাসপাতাল রোডের পুকুর ভরাটের বিষয় পরিবেশ অধিপ্তরকে অবহিত করা হলেও তারা দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি কাশিপুরের শীতারামের দীঘি র্দীঘদিন ধরে ভরাটের চেস্টা করছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী চেয়ারম্যান। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের বিধিনিষেধও রয়েছে। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কেবল নোটিশ দিয়েই দায় সারে।

এদিকে নগরের কাশিপুর বাজার সংলগ্ন সীতারামের দীঘি প্রভাবশালীরা রাতের আধারে বালু ফেলে ভরাট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান আলী এ দীঘিটি ফের রাত নামলেই ট্রাকে বালু এনে ফেলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সেখানকার বাসিন্দা আ: মজিদ বলেন, নগরের ২৯ নং ওয়ার্ডের কাশিপুর বাজারের পিছনে ভুমি অফিসের বিপরীতে সীতারামের দীঘিটি র্দীঘদিন ধরে ভরাটের পায়তারা চালাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী আলী চেয়ারম্যান। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও তা মানছেন না। সিটি করপোরেশন কয়েকবার বাধা দিলেও সম্প্রতি আবার রাতের আধারে ভরাট চলছি পুকুরটি। গত পরশুদিনও দেখা গেছে ট্রাকে করে দীঘির পূর্ব পাশের উত্তরাংশ ইট ফেলছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর বরিশালের সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, নগরের দুটি প্রাচীন জলাশয় ভরাট বন্ধে সিটি করপোরশেন, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু আমরা দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ দেখছি না।

বরিশাল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: কামাল মেহেদী বলেন, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাসপাতাল রোডের পুকুর ভরাট বন্ধে নোটিশও দিয়েছেন। অন্যটির বিষয়ে জানা নেই।

এব্যপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশালের উপ পরিচালক এ এইচ এম রাশেদ বলেন, হাসপাতাল রোডের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর যে পুুকুর ভরছে সেটি রোধে নোটিশ দেয়া হয়েছে। শীতারামের দীঘির বিষয়েও খতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *