ভালোবাসায় মাখামাখি বসন্ত

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
‘ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত’- এমন প্রত্যয় নিয়ে বসন্তের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে সর্বত্র। বসন্ত হলো শেষ ঋতু। প্রকৃতির ওপর ভর করে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে সাধারণত শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিন পহেলা ফাল্গুন বেশ আয়োজন-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে থাকে। একই দিন বিশ্ব ভালবাসা হওয়ায় বসন্তে তরুন-তরুনী, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের মধ্যেও বসন্তে যেন ভালবাসা মাখামাখি হয়ে গেছে।

বসন্তে গাছে গাছে ঝরে যাওয়া পাতার বদলে নতুন পাতা আসে। চারদিক পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ায় শোভিত হয়ে ওঠে। এর প্রতিফলন ঘটেছে বাউলসম্রাট শাহ আব্দুল করিমের গানে- ‘বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে সই গো বসন্ত বাতাসে।’ ফুল ফোটার পাশাপাশি পাতার আড়ালে শুনতে পাই কোকিলের কুহুকুহু ডাক।

ঋতুর ধারণা স্পষ্ট হলেও বসন্তকেই বলা হয়ে থাকে ‘ঋতুরাজ’। তাই বসন্তের গৌরব ও ঐতিহ্য অনেক দিনের, অনেক যুগের, অনেক শতাব্দীর। বসন্ত উৎসবটি বাঙালির সব বয়সির হলেও এতে তারুণ্যের প্রভাবই থাকে বেশি। এ দিনটিতে তরুণ-তরুণীরা বাসন্তী রঙের পোশাকে নিজেদের সজ্জিত করে। ফুল বিনিময় ও ব্যবহারের ধুম পড়ে যায়।

পহেলা ফাল্গুনের আরেকটি ভিন্ন আমেজ রয়েছে, তা হলো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। কাকতালীয়ভাবে আমাদের বসন্তের প্রথম দিনটি পড়েছে খ্রিষ্টীয় দিনপঞ্জির ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে, যা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে হিসাবে। বিশ্বের তাবৎ মানুষের মধ্যে ভালোবাসার অনুভূতি জাগাতেই এ দিবসটির অবতারণা।

অতীতে এ দিবসটি মূলত পাশ্চাত্যের দেশগুলোতেই পালিত হতো। তবে বর্তমানে তা বিশ্বের সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ছড়িয়েই পড়েনি, বরং তা আড়ম্বর ও জাঁকজমকপূর্ণভাবেই উদ্যাপিত হয়। যদিও এর ইতিহাস নিয়ে নানা ধরনের মতামত পাওয়া যায়। ১৪ ফেব্রুয়ারি কেন ভালোবাসা দিবস? শোনা যায় প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল রোমান দেব-দেবীর রানী জুনোর সম্মানে ছুটির দিন। সে সময়ে জুনোকে মনে করা হতো নারী ও প্রেমের দেবী। তাই ভালোবাসার দিবসটি ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে ভিন্নমতও আছে।

২০০ খ্রিষ্টাব্দে রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস সেদেশে যুবকদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ করেন। সম্রাটের ভাবনা ছিল, যুবকরা বিয়ে করলে যুদ্ধে যাবে কে? কিন্তু এই নিয়মের বিরোধিতা করেন এক সাহসী রোমান যুবক, নাম তার ভ্যালেন্টাইন। সে সময়ে সম্রাটের ঘোষণার বিরোধিতা মানেই মৃত্যুদণ্ড। কোনো এক ১৪ ফেব্রুয়ারিতে শাস্তিস্বরূপ ভ্যালেন্টাইনের মাথা কেটে নেওয়া হয়। মনে করা হয়, এই ভ্যালেন্টাইনের নামেই আজকের ভালোবাসা দিবস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *