বিএম কলেজের সম্পত্তি বেদখল, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা, স্মারকলিপি প্রদান

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
ঐতিহ্যবাহী বরিশাল বিএম কলেজের সম্পত্তি রক্ষায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে অধ্যক্ষ বরারবর স্মারকলিপি দিয়ে কলেজের ৩টি হলের সম্পত্তি বেদখল হওয়ার আংশকা করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন পুকুরের একাংশ ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক দখল করায় অবিলম্বে উদ্ধারের দাবী জানিয়েছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদ একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরী সভা ডেকেছেন। গত বুধবার থেকে কলেজের অশ্বিনী কুমার হলের পাশের পুকুরের একাংশ ভরাট করে দখল করেছে ছাত্রলীগ নেতা মুন্না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে অর্ধশত শিক্ষার্থী স্মারকলিপি নিয়ে যান। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন- কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে অশ্বিনী কুমার হল (ডিগ্রী হল) সংলগ্ন দক্ষিন-পশ্চিমে পুকুরের অংশ বেদখল হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের বাহিরে মুন্সিগ্যারেজ সংলগ্ন লালু ভবন এবং সোবাহান মিয়ার পুল সংলগ্ন দেবেন্দ্র ভবনের সম্পত্তি আত্নসাতে লিপ্ত হচ্ছে কতিপয় ব্যাক্তি। অবিলম্বে কলেজের এ সম্পত্তি রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদের কাছে দাবী জানান।

এসময় শিক্ষক সমিতির সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আল আমিন সরোয়ার, সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষন কমিটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক নুর মোহম্মাদ, সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস, সহকারী অধ্যপক মো: মনিরুল আহসান হিরু প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

 

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার তার কাছে এসে কলেজের সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আশংকা জানিয়েছেন। ছাত্ররা জন্য। হোস্টেলের জমিজমা সংরক্ষনের দাবীতে দুপুরে তাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিশেষ করে অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন পুকুর দখল করে পাইলিং দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্ররা। তিনি তাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে এটি তার আবেগের বিষয়। যেকারনে আগামী সপ্তাহে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরী সভা সভা করে এ কলেজের সম্পত্তি রক্ষায় উদ্যোগ নিবেন।

প্রসঙ্গত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ মুন্না বিএম কলেজের পুকুরের একাংশ ভরাট করে গত দুই দিন ধরে ভরাট করে পাইলিং দিয়েছেন। ওই সংবাদের পর শিক্ষার্থী ও প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।

অশ্বিনী কুমার হলের একাধিক ছাত্র বলেন, অশ্বিনূ কুমার হলের মসজিদের পুকুরের দক্ষিন পশ্চিম কর্নারে গত মঙ্গলবার থেকে পাইলিং দিয়ে পুকুরের একাংশ ভরাট করছে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ মুন্না। মুন্না ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য এবং বিএম কলেজ কর্ম পরিষদের সাবেক ক্রিড়া সম্পাদক।

ছাত্ররা জানান, দলীয় প্রভাব দেখিয়ে তিনি পুকুরের পাশের সরকারি সম্পত্তি লিজের নামে দখল করেছেন। গতকাল হোস্টেলের ছাত্ররা পুকুরের মধ্যে পাইলিং করে জমি দখলের বিষয় জানতে চাইলেও কাজ থামেনি। পরে অধ্যক্ষ এস কাইউম উদ্দিনের কাছে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। এর আগে সাবেক অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়ার সময় ওই পুকুরে পাইলং করতে গেলে মাপজোক না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এবার কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গতকাল থেকে পাইলিং শুরু করেছে। ছাত্ররা জানান, মুন্না স্থানীয় কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তারা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না কেউ।

জানতে চাইলে কলেজের সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষন কমিটির আহবায়ক ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুর মোহাম্মদ বলেন, কলেজের পুকুরের পাশের কিছু জমি লিজ নিয়েছে একটি পক্ষ। কিন্তু কলেজের পাশের জমি কিভাবে লিজ নিলো, তার বৈধতাই বা কি তা তারা জানেন না। পুকুরের এক পাশে পাইলিং করতে গিয়ে এখন কলেজের পুকুরের জমি দখল হচ্ছে। এ নিয়ে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে আছে। তারা অচিরেই পদক্ষেপ নিবেন।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ মুন্না সাংবাদিকদের বলেন, বিএম কলেজের জমির ৩ প্লট পড়ে তার জমি। সেখানে এলাকাবাসী যে রাস্তা করছে তার শরীক হয়েছেন মাত্র সে। অধ্যক্ষের সঙ্গে তার বিরোধ থাকায় তাকে নানা ভাবে ফাঁসানোর চেস্টা চলছে।

স্থানীয় কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব বলেন, যেখানে পাইলিং দিচ্ছে সেই জমি সরকারি লিজ নেয়া। তাই তিনি সেটি উদ্ধারে একা কিছু করতে পারবেন না। ব্যাক্তিগত হলে জেতে পাড়তেন। কাউন্সিলর বিপ্লব বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ জমি মাপজোক করে সিদ্ধান্ত নিবে। এখানে তার কি করার আছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *