ডিসি’র হুশিয়ারী: ডুবছে বরিশাল বিআরটিসি

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ বরিশালে ডুবতে বসেছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস। এ সার্ভিসের বিভিন্ন রুটের বাসের ছাদ থেকে পানি পড়ায় ছাতা নিয়ে যাত্রা করতে হয়। বাস ঢেকে রাখা হয় পলিথিন দিয়ে। এসি বাসে যেন চৈত্র মাসের গরম। লক্করঝক্কর বাসে বসার অবস্থা বেহাল। এমন দৃশ্য দেখে বরিশাল জেলা প্রশাসক ক্ষুব্দ হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচোলনার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিআরটিসি বাস বরিশালের বিভিন্ন রুটে দীর্ঘ মেয়াদী ইজারা দেয়ায় সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। এখানকার ১৮টি রুটের যাত্রী বিআরটিসির বাস সার্ভিস নিয়ে এন্তার অভিযোগ তুলেছেন।
ঈদ উল আযহার প্রস্তুতি সভায় গত ২৯ জুলাই বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান একাধিকবার বলতে থাকেন তার কাছে একটি বাসের ছবি আছে। যা দেখলে সবাই বুঝবে বিআরটিসি বাসের সেবার নমুনা। তিনি জনাকীর্ন ওই সভায় বিআরটিসি বরিশাল ডিপোর প্রতিনিধিকে হুশিয়ারী দেন, আপনাদের বাসের ছাদ থেকে পানি পড়ার সুনির্দিস্ট অভিযোগ আছে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয় বাস। দ্রুত সময়ে এ অবস্থার উত্তরন না ঘটালে ভোক্তা অধিকার আইনে ভ্রাম্যমান আদালত ব্যবস্থা নিবে। জেলাপ্রশাসক বিষয়টি রেজ্যুলেশন আকারে লিপিবদ্ধ করারও নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, বিআরটিসি’র বরিশাল ডিপো থেকে ১৮ রুটে ৫৪টি বাস চলাচলের কথা থাকলেও মেরামতের অভাবে ১২টি বাস অকেজো হয়ে আছে। যে ৪২টি বাস রয়েছে সেগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়েছে যাত্রীসেবা। এসব বাস দীর্ঘমেয়াদী ইজারা দিয়ে চালাচ্ছে বরিশাল ডিপো কর্তৃপক্ষ। ফলে এই ডিপো থেকে সরকার মোটা অংঙ্কের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে বলে সংশ্লিস্টরা মনে করছেন। উদাহরন হিসেবে বিআটিসি নিজেরাই বাস পরিচালনা করলে প্রতি মাসে বরিশাল-আমুয়া রুটে দুটি বাসে সরকারে আয় হতো প্রায় ৭ লাখ টাকা। অথচ ইজারায় আয় হচ্ছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা। একই ভাবে বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে দুটি বাসে সরকারের আয় হতো ৪ লাখ টাকা। অথচ বর্তমানে সেখানে আয় হচ্ছে ১১ হাজার টাকা।
ডিপোর একাধিক চালক ও কন্ট্রাকটার অভিযোগ করেছেন, গাড়ি মেরামত এর নামে লাখ লাখ টাকা বেহাত হচ্ছে এখানে। অথচ এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চালকরা বেতন পান না দীর্ঘ মাস ধরে।। বেতন বন্ধ থাকায় এসব স্টাফরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন করছেন।
বরিশাল বিআরটিসি বাস ডিপো সুত্রে জানা গেছে, তিন বছর পূর্বে ১০টি নতুন ভারতীয় এসি বাস দিয়ে বরিশাল-মাওয়া রুটে বিশেষ একটি সার্ভিস চালু করা হয়। নি¤œমানের গাড়ির কারণে এখন তা যাত্রী বিড়ম্বনায় পরিণত হয়েছে। একইভাবে আরও ১৬টি বাস প্রদান করা হলেও তার সবগুলোই এখন এ ডিপোর অনেকটা বোঝা। এসব এসি বাসের প্রায় সবগুলোতেই প্রচন্ড গরমে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টি নামলেই বাসের ভেতরে পানি পড়তে থাকে অনবরত। তাই এসব রুটের যাত্রীরা পানি থেকে রক্ষা পেতে ছাতা নিয়েই বাসে উঠেন।
বরিশাল-মাওয়া রুটের যাত্রী মেহেদী হাসান জানান, বিআরটিসির বাস প্রায়সই ইঞ্জিন বিকল হয়ে সড়কে পড়ে থাকে। ছাদ থেকে পানি পড়ে। এসি বাসে গরম আরও বেশি। বরিশাল-খুলনা রুটের যাত্রী শামিমা জাহান বলেন, বাসের অবস্থা লক্করঝক্কর। লিজ দেয়ায় ঠিকাদারের লোকজন যাত্রীদের সাথে অসোভন আচারন করে।
এব্যপারে বিআরটিসির বরিশাল ডিপোর ম্যানেজার মো: জামশেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী ইজারার বিষটি প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে হয়ে থাকে। ঠিকাদাররা কেবল রাজস্ব এর অর্থ তার কাছে দিয়ে যায়। নি¤œমানের যাত্রী সেবা ও জেলা প্রশাসকের হুশিয়ারী প্রসঙ্গে তিনি অবশ্য কোন মন্তব্য করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *