শেবাচিম হাসপাতাল: বিপুল পরিমান চিকিৎসা সরঞ্জাম জব্দ

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট ॥ বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে সেবিকাদের কক্ষে আবারও বিপুল পরিমান সিরিঞ্জ, ক্যানুলা ও স্যালাইন সুচ মজুদ পাওয়া গেছে। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেনের নেতৃত্বে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেগুলো জব্দ করেছেন। এসব সিরিঞ্জ ও ক্যানুলা ও স্যালাইন সুচ কিভাবে মজুদ হলো, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা। তবে ধারনা করা হচ্ছে বাহিরে বিক্রির উদ্দেশ্যে এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম রোগীদের বিতরণ না করে সেবিকাদের কক্ষে মজুদ রাখা হয়। আর এর সাথে জড়িত নার্সদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ২ হাজার পিস সিরিঞ্জ, ক্যানুলা ও স্যালাইন সুচ জব্দ করা হয়েছে। ওয়ার্ডে চাহিদার সঙ্গে মজুদের অসংগতি থাকায় সেগুলো জব্দ করা হয়। ধারনা করা হচ্ছে হাসপাতালের কেন্দ্রীয় ভান্ডার থেকে সরবরাহ করা এ চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো রোগীদের বিতরণ না করে সেগুলো সেবিকাদের কক্ষে মজুদ রাখা হয়। পরে এগুলো বাহিরে বিক্রি হতে পারতো।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ষ্টোর রুম থেকে সরবরাহ করা ওষুধ রোগীদের মধ্যে ঠিকমত বিতরণ হয় কি-না তা যাচাই করতে তিনি প্রতিমাসে ওয়ার্ডের ষ্টোররুমগুলো পরিদর্শনে যান। গত তিন মাস ডেঙ্গু রোগীর চাপের কারনে ওয়ার্ডগুলো পরিদর্শন করেননি। বুধবার মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ষ্টোর রুম পরিদর্শনে গিয়ে ওষুধ মজুদ স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। তবে সিরিঞ্জ, ক্যানুলা ও স্যালাইন সুচ পাওয়া গেছে অস্বাভাবিক পরিমান বেশী।
পরিচালক জানান, তিনি সেগুলো জব্দ করেছেন। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হবেন উদ্ধার হওয়া চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো বৈধ নাকি অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারবেন বলে জানান পরিচালক ডা. বাকির হোসেন।
হাসপাতালের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা সরঞ্জাম রোগীদের জন্য ব্যবহার না করে তা মজুদ রেখে পরবর্তীতে বাহিরে বিক্রি করে দেতয়া হচ্ছে। এ চক্রের সাথে ওই ওয়ার্ডসহ আর কতিপয় নার্স জড়িত।
জানতে চাইলে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স হোসেনে আরা, রহিমা বেগম বলেন, কাগজপত্রের হিসাবের সঙ্গে মজুদ ওষুধ ও অন্যন্য সামগ্রীর মিল পাওয়া গেছে। কেন এগুলো রোগীদের জন্য ব্যবহার না করে মজুদ রাখা হয়ে তার কোন জবাব দেননি স্টাফ নার্স রহিমা।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১২ মে হাসপাতাল সংলগ্ন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কোয়ার্টারের পুকুর থেকে বিপুল পরিমান সরকারি ওষুধ উদ্ধার করা হয়। এর জের ধরে পরদিন ১৩ মে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে অভিযান চালানো হলে বিভিন্ন কক্ষে লুকিয়ে রাখা ৫ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ওষুধ উদ্ধার করে হাসপাতাল প্রশাসন। রোগীদের বিতরণ না করে ওষুধগুলো বাহিরে বিক্রির জন্য লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় ওয়ার্ডের সেবিকা ইনচার্জ বিলকিস বেগমকে গ্রেফতার ও পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *