নাগরিক রিপোর্ট ॥ বরিশালে খুচরা বাজারে পিয়াজের কেজি শত টাকার ওপরে উঠে গেছে। রোববার রাতে ভারত থেকে রফতানি বন্ধের খবর প্রচার হওয়ার পর ১২ ঘন্টার ব্যবধানে প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে পিয়াজের। পিয়াজ পট্টির আড়তদার সিন্ডিকেট আবার অতি মুনাফার লোভে পিয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। পিয়াজের দাম নিয়ে এমন পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার নগরীতে পিয়াজ ছাড়াই খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এদিকে সারাদেশে টিসিবি পন্যের তালিকায় পিয়াজ থাকা সত্ত্বেও বরিশালে এই পন্যটি বিক্রি না হওয়ায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাধারন ক্রেতাদের মাঝে।
নগরীর প্রধান মোকাম হাটখোলা পিয়াজপট্টিতে রোববার রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পিয়াজের পাইকারী দর ছিল প্রতি কেজি প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। সেখানকার অনেক পাইকারী দোকানেই পিয়াজ বিক্রি রোববার রাতে বন্ধ রাখে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিয়াজপট্টির একাধিক সুত্র জানিয়েছে, অতি মুনাফার আশায় পিয়াজ নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। তারা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পিয়াজের। সোমবার সকালে ওই মোকামে পিয়াজের সর্বনি¤œ কেজি বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানগুলোতে আরও বেশী দামে বিক্রি হয়। নগরীর সার্কুলার রোডের রাজ্জাক স্টোর্স এর ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার দোকানে আমদানী করা পিয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। দেশী পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা পর্যন্ত। তবে দেশী পিয়াজ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
এদিকে রোববার সকালে নগরীতে টিসিবির ৩টি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। যদিও টিসিবি সারাদেশে ৪৫ টাকা কেজি দরে পিয়াজ বিক্রির ঘোষনা দিলেও বরিশালে পণ্য তালিকায় সেটি নেই। নগরভবনের সামনে টিসিবি’র পন্য কিনতে আসা সেন্টু মিয়া নামে একজন সরকারী কর্মচারী বলেন, ‘গনমাধ্যমে দেখলাম রাজধানীতে টিসিবি পিয়াজ দিচ্ছে ৪৫ টাকা কেজিতে। সেই আসায় আখানে এসেও পেলাম। না তিনি বলেন, যে পিয়াজ কোরবানীর আগেও ৩০ টাকা ছিল তা এখন ১১০ টাকা। রান্নায় পিয়াজ খাওয়া এখন বন্ধের উপক্রম। অপর একজন ক্রেতা জানান, টিসিবি হাতে গোনা কয়েক জায়গায় পন্য বিক্রি করে। সাধারন মানুষ তা খুজে পায় না। তার উপর পিয়াজ নেই, ভাবতে পারেন। নগরীতে ট্রাকে করে টিসিবি পন্য বিক্রি করা একজন ডিলার জানান, পিয়াজ না থাকায় ক্রেতরা ক্ষুব্ধ। অন্য পন্য কিনতে চান না।
এ প্রসঙ্গে টিসিবির বরিশাল বিভাগীয় প্রধান মো. আনিছুর রহমান জানান, কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকেই তাদের পিয়াজ সরবরাহ করা হয়নি। যে কারনে তারা পিয়াজ ছাড়াই তিনটি পণ্য যথাক্রমে চিনি ৫০ টাকা, মশুরী ডাল ৫০ টাকা ও সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা দরে বিক্রি শুরু করেছেন। টিসিবির এ কর্মকর্তা জানান, দূর্গপূজা উপলক্ষে ৫দিন মাঠ পর্যায়ে তিনটি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলবে। প্রতিদিন ৪ জন ডিলার নগরীর চারটি পয়েন্টে টিসিবি নির্ধারিত মূল্যে চিনি, মশুরী ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রি করবে। তিনি বলেন, এই মুহুর্তে পিয়াজ পন্য তালিকায় থাকার কুব প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সরবারহ না থাকায় তাদের কিছুই করার নেই।
২০১৯-১০-০১