ঝালকাঠীতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধার ম্যুরাল ভাঙ্গল দৃৃর্বত্তরা

Spread the love

ঝালকাঠির নলছিটিতে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ থেকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কর্য মূর‌্যাল ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গত রাতে উপজেলার ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ষাটপাকিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নলছিটি থানার ওসি মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, ৫ বছর আগে স্থানীয় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন নিজের এবং বিভিন্ন ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে ঝালকাঠি-বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের পাশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন। গত রাতের যেকোন সময় অজ্ঞতা দুর্বৃত্তরা স্মৃতিস্তম্ভ থেকে বঙ্গবন্ধুসহ মোট ৪টি ভাষ্কর্য মূর‌্যাল ভেঙে পাশের খালে ফেলে দেয়। ভাস্কর্যগুলো পাশের খাল থেকে রবিবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে ওসি শাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, ঘটনার সাথে কারা জড়িত তাদের খুঁবে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানায়, ১৯৭১ সালে বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয় ঝালকাঠির চাচৈর গ্রামে। এ যুদ্ধের স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখতে ২০১৭ সালে ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের ষাইটপাকিয়ায় নলছিটির প্রবেশদ্বারে একটি মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ চার মুক্তিযোদ্ধার ম্যুরাল রয়েছে।
জানা যায়, ৬ মাস আগে মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন প্রয়াত হন। তাঁর ছেলে মো. মাসুম হাওলাদার কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন, একাত্তরে এই স্থানটির কাছে চাচৈর নামক স্থানে ঝালকাঠি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এলাকায় পাক বাহিনী নির্মম অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ করে। তাই একাত্তরের স্মৃতি রক্ষায় আমার বাবা মফিজ উদ্দিন ধারদেনা করে এবং বন্ধু-বান্ধদের কাছ থেকে সাহায্য এনে মুক্তিযুদ্ধের এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করন। ওই ভাষ্কর্যের উপরে বঙ্গবন্ধু এবং তিন মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য ম্যূরাল নির্মাণ করা হয়েছিল। এদিকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কয্য ভাংচুর করায় মুক্তিযোদ্ধা এবং স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেঁটে পড়েছেন।
এব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার তাজুল ইসলাম চৌধুরী দুলাল জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি এমন ন্যাক্কারজনক ভাঙচুর চালিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন সমাজের নানা শ্রেনীর মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে এ ভাষ্কর্য নির্মাণ করেছিলেন। যেটি এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের জন্য সম্মান বহন করত। আমরা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচার দাবি করছি। ঝালকাঠি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীরা এ কাজ করেছে। আমরা খুব শীঘ্রই এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচি আহবান করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *