দু পা হারানোর পাশে পুওর ফান্ড ফর বাংলাদেশ

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল: স্বপ্ন ছিল অনেক। আর সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে পাড়ি জমিয়েছিলেন মরুর দেশ সৌদি আরবে নলছিটির পূর্ব মালিপুরের জালাল হাওলাদার। প্রায় দুই বছরের মত কাজ করে স্বপ্নগুলো শুধু জাল বুনতে শুরু করছে। ঠিক তখনই প্রতিদিনের মত সকালে ঘুম ভেঙ্গে বিছানা থেকে নামতে গিয়ে দেখেন দু পা নড়ছেনা, অনেক চেস্টা করেও পা দুটো তার জায়গা থেকে এগোচ্ছেনা। তখনও বুঝে উঠতে পারেননি জীবন চলার পথের কত বড় অঘটন তার জন্য অপেক্ষা করছে।
বন্ধুদের সহায়তায় ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করানোর পরও কোন রোগ ধরা পরলোনা। তবে তাদের ধারনা- ছোটবেলায় পোলিওর টিকা না দেয়ায় হতে পারে এ সমস্যা। কোম্পানীর মালিক তার চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করতে অক্ষমতা প্রকাশ করলে জালাল চলে আসে নিজ জন্মভূমির কাছে।
চিকিৎসা করাতে গিয়ে যতটুকু জায়গা জমি ছিল, তা বিক্রিও শেষ হয়েছে অনেক আগে। নিঃস্ব এ মানুষটির পাশে এগিয়ে আসেনি কোন উচ্চবিত্তরাও, কাছের অনেক মানুষরাও তার খবর নেননি। কিন্তু তার পাশে ছাঁয়ার মত আগলে রেখেছেন তার স্ত্রী। রাস্তার পাশে খুপরির মত ছোট একটা দোকান দিয়ে কোনভাবে জীবন সংগ্রামে টিকে আছেন তার স্বামীর সাথে,যেহেতু মানুষটি পঙ্গু,তাই স্ত্রীকেই করতে হয় কেনাবেচা থেকে যাবতীয় কাজ।
এ অসহায় পরিবারটির বাড়ীর কাছেই পুওর ফান্ড ফর বাংলাদেশের আব্দুল লতিফের বাড়ী। যিনি আয়ারল্যান্ড প্রবাসী, গত কয়েক মাস আগে পুওর ফান্ড যখন গঠন হয়, তখন থেকেই তার ভিতর এ লোকটিকে সাহায্য করার ইচ্ছা জাগে। গত দু সপ্তাহ আগে পুওর ফান্ডের লটারীর ড্র তে আব্দুল লতিফের ছেলে রবিন হাওলাদারের নাম আসলে ছেলে তার বাবাকে লটারীর সব টাকা দিয়ে দেন ঐ অসহায় মানুষটির দোকানের মালামাল কিনে দেয়ার জন্য। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল লতিফের ভাই এ পঙ্গু লোকটিকে লটারীর সব টাকা দিয়ে মালামাল কিনে তার কাছে পৌছে দেন। মালামাল পেয়ে দু পা হারানো অসহায় মানুষটির চোখের নোনা জলে হাসির ঝিলিক মুগ্ধ নয়নে দেখেছিলেন উপস্থিতরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *