সৈয়দ আশরাফকে নিয়ে বোন ডা. সৈয়দা জাকিয়ার স্মৃতিচারন

Spread the love

নাগরিক ডেক্স : ‘প্রতি মুহুর্তে বড় ভাইয়ের অনুপস্থিতি টের পাই। বড় ভাই আমাদের বাবার মতোই ছিলেন। বাবা-মায়ের অনুপস্থিতি আমরা টের পেতাম না এই বড় ভাইয়ের জন্য। এক বছর ধরে আমরা একমাত্র অভিভাবকের অনুপস্থিতি অনুভব করছি বেশি করে। নিভৃতে কাজ করতেন তিনি। তার সততা ও দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে এই সময়ের তরুণরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি সঞ্চয় করতে পারে।’

বাংলাদেশে সৎ রাজনীতিকের উজ্জল উদাহরণ সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্পর্কে এভাবেই স্মৃতিচারণ করলেন তাঁরই ছোটবোন সাংসদ ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। বড় ভাইয়ের প্রথম প্রয়াণ দিবসে তিনি শুক্রবার স্মৃতিচারণ করেন।

তারা সবাই সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সততার প্রশংসা করেন ও তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের জ্যেষ্ঠপুত্র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম প্রয়াণ দিবস ছিল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) । এ দিবসে লাইভে প্রয়াতের বোন ডা. লিপির বক্তব্য শুনে দর্শক শ্রোতারা প্রতিক্রিয়া যেমন জানাচ্ছিলেন তেমনি সৈয়দ আশরাফের গুণাবলীর প্রশংসা করছিলেন।

অন্য অনেকের মতো দর্শক-শ্রোতা গৌরাঙ্গ দাস প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন- আশরাফুল ইসলাম ছিলেন একজন সৎ, নিবেদিতপ্রাণ, দেশপ্রেমিক রাজনীতিক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তার মতো স্বচ্ছ মনের ও চরিত্রের নেতার অভাব পুরণ হওয়া কঠিন। আরেক দর্শক-শ্রোতা আবদুল জলিল লেখেন- সৈয়দ আশরাফ একজন ভালো মানুষ ও নেতা ছিলেন। দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে সেলিম রেজা লিখেন- সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অবদান বাঙালী জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

প্রায় আধা ঘন্টার আলাপচারিতায় সাংসদ ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এক পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ছয় মাস পর আমরা কোলকাতায় গিয়েছিলাম। একটি বাড়িতে আমরা থাকতাম। সেই বাড়িতে তাজউদ্দিন আহমদসহ অন্যান্য জাতীয় নেতারাও থাকতেন। আমার আব্বা তখন ভীষণ ব্যস্ত। বড় ভাইকে আমরা দেখতে পেতাম না। আমরা শুধু জানতাম- তিনি যুদ্ধ করছেন। ভোরে শুধু কান্নার আওয়াজ শুনতাম। মা আঁচল মুখে চেপে রেখে কাঁদতেন। বড় ভাই রাতে মাঝে-মধ্যে আসতেন, আবার চলে যেতেন। মা ভয় পেতেন- ছেলে যদি আর না ফেরে। এই ভয়, অনিশ্চয়তা ছিলই। বড় ভাই বলতেন, অনেক বেশি বই পড়তে। রাজনীতিবিদনদের জীবনী পড়ার পরামর্শ দিতেন। তিনি বলতেন, রাজনীতি কারো কাছ থেকে শেখা যায় না। নিজে শিখে নিতে হয়। বড় ভাইয়ের পড়ার টেবিলে, বিছানায় ২-৩টা বই থাকত। সকাল-বিকালে বই পড়তেন। তিনি কম কথা বলতেন। বাবাও কম কথা বলতেন। বড় ভাই সৎ ছিলেন, মেধাবী ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগেও অনেক সৎ রাজনীতিবিদ আছেন। সৈয়দ আশরাফ আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ ছিলেন। এ কারণে তাকে একটু ভিন্নভাবে দেখা গেছে।সূত্র:কালের কণ্ঠ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *