গেইল আর আসবেন না

Spread the love

নাগরিক ডেক্স : ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল। ক্রিকেটের রান মেশিন। বিশ্বের যে কোনো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লীগের প্রাণ ভোমরা তিনি। চার-ছয়ের বন্যা আর সেঞ্চুরি ঝড় তুলছেন নিয়মিতই। নিজেকে ‘ইনিভার্সেল বস’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ৪০ বছর বয়সী গেইলের দাবি, তার মতো আর কেউ আসবে না। বিপিএলের প্রতিটি আসরে খেলেছেন গেইল। এবার শুরুতে শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এসেছেন।

গতকাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আরো পাঁচ বছর খেলতে চান তিনি। ১৯৯৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের কথাও ভোলেননি। সেবার বাংলাদেশ যুব দলের হয়ে খেলেছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ম্যানেজার সাবেক ক্রিকেটার ফাহিম মুনতাসির সুমিত। পাশে দাঁড়ানো সুমিতকে বলেন, ‘তুমি এখন ম্যানেজার আমি তোমার দলে খেলছি।’ গতকাল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে গেইলের কথোপকথনের চুম্বক  অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টির পরবর্তী সুপার  স্টার কে!
গেইল: অনেক নতুন খেলোয়াড় এসেছে। শুধুমাত্র একজনকে খুঁজে বের করা কঠিন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপনি সবসময় দেখবেন যে নতুন প্রজন্মের কেউ বেরিয়ে এসেছে। তাদের টি-২০ ক্রিকেটের জৌলুসটা এবং নিজেদের নামটা ধরে রাখতে হবে, উত্তরাধিকার হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে এবং এভাবেই তারা পরবর্তীতে মহাতারকা হয়ে উঠবে।
প্রশ্ন: আপনার মতো  কেউ আসবে বলে আশা করেন?
গেইল: কোনো ক্রিস গেইল কিংবা ইউনিভার্স বস আসবে না। সবসময়ই একজন থাকবে এবং সেই একজন আমার মতো হবে না। নিজের স্বকীয়তার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিশ্বব্যাপী ঘুরতে হবে, নিজের নামটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, সব ধরনের কন্ডিশনে পারফর্ম করতে হবে এবং আমি নিজের ক্ষেত্রে সেটাই কিছুটা ভালভাবে করতে পেরেছি। আমার আর কিছুই প্রমাণ করার নেই এবং আপনারা জানেন যে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে আমি কোন জায়গায় আছি।
প্রশ্ন: কতদিন খেলা চালিয়ে যাবেন?
গেইল: অনেক মানুষই চায় এখনও ক্রিস গেইলকে মাঠে দেখতে। আমার নিজেরও খেলাটার প্রতি যথেষ্ট ভালবাসা ও আসক্তি আছে। যতদিন সম্ভব আমি টি-২০ এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চালিয়ে যেতে চাই। শরীরটাকেও বেশ ভালো বোধ হচ্ছে এবং আমি নিশ্চিত যতই দিন যাচ্ছে আরও তরুণ হচ্ছি আমি। ৪৫ খুব ভাল একটি সংখ্যা। আমি এটাকে ভালো সংখ্যা মনে করি এবং আমার কাছে এটাকেই সেরা মনে হয়।
প্রশ্ন: চারদিনের টেস্ট খেলা নিয়ে আপনি কি ভাবছেন?
গেইল: আমি এটার প্রতি আগ্রহী নই। আমি ১০০ টেস্ট খেলেছি, কিছু ৩ দিনে শেষ এবং কিছু চারদিনে শেষ হয়েছে। কিন্তু পাঁচদিনের টেস্টই হচ্ছে মৌলিক বিষয় এবং চারদিনের টেস্ট হলে আমি সেটার প্রতি তেমন উৎসাহী হবো না। একটা ঐতিহ্য তৈরি হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে এটা চলছে। এখন কেন এটা নিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হচ্ছে?
প্রশ্ন: বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটারদের কেমন দেখছেন?
গেইল: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তারা এখন আমাদের (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) চেয়ে ভালো করছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট উত্থান-পতনের মধ্যে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটছে।
প্রশ্ন: বিপিএলের ‘পোস্টার বয়’ তকমা-টা কতখানি উপভোগ করেন?
গেইল: এটা এমন এক জায়গা যেখানে আপনি এসে খেলতে পারেন। বিশেষ করে সমর্থকদের কাছ থেকে যে সমর্থনটা পাওয়া যায় তারা সত্যিই বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগায়। মাঠে তারা বিনোদন চায়। এটা মাঝে মাঝে খেলোয়াড় হিসেবে আপনাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা দেয়। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে খেলেছি এবং চমৎকার কেটেছে আমার, উপভোগও করেছি অনেক। আমি এবার কিছুটা দেরিতে এসেছি কিন্তু এটাও বলেছি যে আবার আসতে আগ্রহী আমি।
প্রশ্ন: আসন্ন   টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার চিন্তা করছেন?
গেইল: সুযোগটা নেয়ার জন্য দুয়ার খোলাই আছে। দেখা যাক কী হয়! আমাদের কিছু উজ্জ্বল তরুণ তারকাও আছে। নিজের ক্ষেত্রে আমি আমার পরিবারের কাছ থেকে কিছু শোনার অপেক্ষায় আছি। দেখা যাক ইউনিভার্স বস কোথায় কিভাবে এগিয়ে যায়।
প্রশ্ন: জীবন উপভোগ করার রহস্য কি?
গেইল: আমার বইয়ে আমি যেটা লিখেছি, অস্ট্রেলিয়ায় আমার হার্ট সার্জারি হয়েছিল এবং সেটাই আমার জীবনের প্রথম সার্জারি। যখন আমার জ্ঞান ফিরল, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে সর্বোচ্চ ভালভাবে বাঁচব এবং কখনোই পেছনে তাকাবো না। আমি সবসময়ই সচেষ্ট থাকি সর্বোচ্চটা উপভোগ করতে।
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন পাকিস্তান ভ্রমণ নিরাপদ?
গেইল: পাকিস্তান এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম একটি নিরাপদ জায়গা। তারা বলছে আপনাকে প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের নিরাপত্তা দেবে, তাই আপনি খুবই ভালো থাকবেন। আমি বলতে চাইছি যে, বাংলাদেশেও আমরা খুব ভাল অবস্থায় আছি, ঠিক না?

সুত্র- মানবজমিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *