নাগরিক ডেস্ক : বগুড়ায় বাবা ও মেয়ে মিলে সেলিম প্রামানিক (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে গলাকেটে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে লাশ ভস্ম করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলার দুপঁচাচিয়া উপজেলার বড়কোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সেলিম প্রামানিক উপজেলার খিদিরপাড়া এলাকার কফিল উদ্দনের ছেলে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুর রহমান ও তার মেয়ে রূপালী বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বাড়িও উপজেলার খিদিরপাড়া এলাকায়।
শনিবার বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান।
তিনি জানান, রূপালী বেগমের স্বামী একরামুল হক কয়েক বছর যাবত বিদেশ থাকেন। এরই এক পর্যায়ে রূপালী বেগম তার বাল্য বন্ধু একই এলাকার সেলিমের সঙ্গে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরকীয়া চলার এক পর্যায়ে সেলিম রূপালীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে রূপালী রাজি হননি। এদিকে রূপালীর সঙ্গে শারীরিকভাবে মিলিত হওয়ার বেশ কিছু চিত্র গোপনে সেলিম ভিডিও করে রাখেন। রূপালী সেলিমকে বিয়ে করতে রাজি না হলে সেলিম ভিডিওগুলো রূপালীর স্বামী একরামুলের নিকট পাঠান। এতে রূপালী সেলিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি সেলিকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। পরিকল্পনায় রূপালী সামিল করেন তার বাবাকেও। বাবা-মেয়ে মিলে ৩ জন ভাড়াটে খুনির সঙ্গে চুক্তি করে সেলিমকে হত্যার বিষয়ে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ ফেব্রয়ারি রাতে রূপালী সেলিমকে বিয়ে করবে বলে আগ্রহের কথা জানায়। সেলিম পাঞ্চাবী পরে রাতে রূপালীর সঙ্গে দেখা করতে বড়কোল এলাকায় ফসলের মাঠে যান। সেখানে আগে থেকে লুকে থাকা খুনিরা সেলিমকে গলাকেটে হত্যার পর লাশ আগুনে পুড়িয়ে ভস্ম দেয়।
পুলিশ সুপার বলেন, নিহতের পরিচয় যেন জানতে না পারে এ কারনেই হত্যার পর লাশ আগুনে পুড়ে ভস্ম করা হয়। কিন্তু খুনিরা যতই চতুরতার সঙ্গে খুন করুক না কেন কিছু ক্লু থেকেই যায়। আর এই ক্লু থেকেই খুনের রহস্য উৎঘাটন হয়ে থাকে। এমনইটাই হয়েছে এই খুনের ক্ষেত্রেও। আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে যাওয়া লাশের পরিচয় উদ্ধার করতে না পেরে পুলিশ বিভাগ লাশ নিয়ে বিপাকে পড়ে যায়। এরই এক পর্যায়ে আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয় লাশের পাশে পড়ে থাকা এক টুকরো কাপড়। যেটি ছিল সেলিমের পরিধেয় পাঞ্জাবীর কাপড়ের একটি টুকরো। এরই জেরে তদন্ত করে ঘাতক বাবা-মেয়েকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং ভাড়াটে খুনিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।