‘মৃত্যু’র দেড় মাস পর বাড়ি ফিরে বললেন বৃদ্ধ,

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক: দুপুরবেলা ঘরে রান্না করছিলেন গীতা পাল। হঠাৎ এক বৃদ্ধ বাড়ি এসে বললেন, ভাত দে ক্ষুধা পেয়েছে। শুনে গীতার হাত-পা ঠান্ডা হওয়ার উপক্রম। হাতে খুন্তি নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন তিনি। প্রতিবেশীর ছুটে আসেন। তাদেরও পা কাঁপছে দৃশ্য দেখে। মাসখানেক আগে যার শ্রাদ্ধ করা হলো, সেই ব্যক্তিই এখন বাড়িতে সশরীরে হাজির।

গত শুক্রবার দুপুরে ভারতের নৈহাটির সাহেব কলোনি মোড় এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে। পরে অবশ্য হইচই থামতে জানা গেল, যিনি বাড়ি ফিরেছেন তিনি ভূষণ পাল (৭৪)। কদিন আগেই তার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ভূষণ পাল মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন । মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে দিন কয়েক পরে ফিরে আসেন। মাকে নিয়ে ভূষণের ছেলে ভাস্কর থাকেন মেদিনীপুরে, সেখানেই চাকরি করেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর নৈহাটির বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ভূষণ। বেশ কয়েক দিন কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৭ জানুয়ারি পুলিশ খবর দেয়, অজ্ঞাতপরিচয় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। প্রদীপ-গীতা যেন গিয়ে মরদেহ দেখে আসেন। পরে কয়েকদিন পর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে দেখেন, শীর্ণকায় দেহ। মুখ দেখে পরিচয় বোঝার উপায় নেই। শেষমেশ ডান পায়ের আঙুল দেখে পরিচয় শনাক্ত করেন তারা। পরে পরিবারের হাতে মরদেহ তুল দেয় পুলিশ। এমনকি লাশ সৎকারের পরে নিয়মমাফিক শ্রাদ্ধও হয়। আর তারপরেই শুক্রবার দুপুরে ফিরে আসেন তিনি।

গীতা বলেন, ‘আমি দুপুরে রান্না করছিলাম। হঠাৎ জানালার সামনে দেখি, কাকা দাঁড়িয়ে। ভাত চাইল। দেখে আমার তো হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। পরে বুঝলাম ব্যাপারটা আসলে কী!’

প্রতিবেশী সুমিত দাস বলেন, ‘কদিন আগে যার শ্রাদ্ধ খেয়ে এলাম, সেই লোকটাই সশরীরে হাজির। এমন ঘটনা ভাবতেই পারছি না।

এদিকে ভূষণ পাল আছেন নিজের খেয়ালেই। এত দিন কোথায় ছিলেন প্রশ্ন শুনে খানিক ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন। তার পরে বললেন, ‘এই একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম।’

আপনার শ্রাদ্ধ হয়ে গিয়েছে, জানেন কি? এমন প্রশ্ন করতেই জবাব দিলেন, ‘তাই নাকি, কই আমাকে তো নেমন্তন্ন (নিমন্ত্রণ) করেনি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *