ইরানে জুমার নামাজ বাতিল

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : ইরানে মরণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় এবং কোম শহরে একটি মাজারের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দেশটির সব প্রদেশের রাজধানীতে জুমার নামাজ বাতিল করা হয়েছে। এদিকে একই আতঙ্কে বিদেশি নাগরিকদের ওমরাহ পালনে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পাশাপাশি নিজ দেশের নাগরিকদেরও মক্কা-মদিনা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সৌদি আরব।

গতকাল বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির দেওয়া বিবৃতি এবং সৌদি সরকারের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ‘টাইম’ ও ‘ফক্স নিউজ’।

এর আগে, গত সপ্তাহে তেহরানসহ বেশ কিছু এলাকার মসজিদে জুমার নামাজ বাতিল করেছিল ইরান কর্তৃপক্ষ। এর পর ইরানের কোম শহরের একটি মাজারে এসে কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করে কয়েকজন ইরানি। তারা দাবি করেন, তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত। তারা ওই মাজারের দরজায় চুম্বন ও চেটে ভিডিও প্রকাশ করেন। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আতঙ্ক আরও বৃদ্ধি পায়।   

এরপর গতকাল বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এক বিবৃতিতে জানান, ইরানের সকল প্রদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় প্রদেশগুলোর রাজধানীতে জুমার নামাজ বাতিল করা হয়েছে।  

এদিকে, গত সপ্তাহে বিদেশি নাগরিকদের ওমরাহ পালনের নিষেধাজ্ঞা আরও বৃদ্ধি করেছে সৌদি আরবের সরকার। তবে এই নিষেধাজ্ঞা ‘অস্থায়ী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সৌদি আরব সরকারের বরাত দিয়ে সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, ওমরাহ পালনে মক্কা ও মদিনায় যেহেতু অনেক মানুষের সমাগম হয়ে তাই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, মদিনায় অবস্থিত হযরত মুহাম্মদ (স.) মসজিদেও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। 

মরণঘাতী করোনাভাইরাসে ইরানে এখন পর্যন্ত ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৯২২ জন। এছাড়াও সারা বিশ্বে প্রায় ৯৫ হাজার ৪০০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ২৮৫ জন।

গত সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা পরিষদের শীর্ষ সদস্য মোহাম্মদ মীর মোহাম্মদী (৭০) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর আগে প্রাণ হারিয়েছেন ভ্যাটিকান সিটিতে ইরানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হাদি খোসরো শাহী। আক্রান্ত হয়েছেন দেশটির উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইরাজ হারিরছিও।

ইরানের করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। সংস্থাটির ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইকেল রায়ানের মতে, অন্য দেশের তুলনায় ইরানেরই মেডিকেল উপকরণ সংকট সবচেয়ে বেশি। দেশটিতে হঠাৎ করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়াকে তিনি ‘আগুন নিভে যাওয়ার আগে দপ করে জ্বলে ওঠার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *