পেয়াজ ব্যবসায়ীদের রমজান প্রস্ততি : বাড়ছে দাম

Spread the love

ভারত থেকে পিয়াজ আসছে-এতে খুশি হওয়ার কিছুই নেই। কারণ পিয়াজ কোনোদিনও আর এক বছর আগের দামে মিলবে না। বরং পিয়াজের গায়ে এখন থেকেই লাগতে শুরু করেছে রমজানের হাওয়া। ফলে পিয়াজের দাম ফের বাড়ছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের পাইকারি, খুচরা পিয়াজ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া পিয়াজের দামের তেজিভাব এখনো বইছে বাজারে। তবে গত বছরের শেষ দিকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পিয়াজ শনিবার সকাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭৫ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। খুচরা বিক্রেতারা জানান, মিশর, পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে আমদানির পর ক্রমেই কমে আসে পিয়াজের দাম।

যা এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি বাজারে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে খবর আসে বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত।

শনিবার সকালে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাকিস্তানি পিয়াজ ৭৫ টাকা কেজি দরে, মিশর ও মিয়ানমারের পিয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগেও ক্রমানুসারে ৬০ ও ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হয়েছে। সে অনুযায়ী দেশি পিয়াজের দাম বাড়েনি। দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের পিয়াজ বিক্রেতা শাহ আমানত ট্রেডার্সের রেজাউল করিম বলেন, একমাস পর শুরু হচ্ছে রমজান। তাই এখন থেকে পিয়াজের মজুদ শুরু করেছে মুনাফাখোর পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে পিয়াজের দাম ফের বাড়তে শুরু করেছে। তিনি জানান, বছরের শুরুতে বাজারে এসেছে দেশি পিয়াজ। সরবরাহও স্বাভাবিক। গত ২ মার্চ ভারত সরকার রপ্তানির নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছে। অথচ এরমধ্যে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে পিয়াজ মজুদ গড়ে তোলে দাম বৃদ্ধির অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে বাজারে পিয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। ওই মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এরপর বছরের শেষের দিকে পিয়াজের কেজি ২২০-২৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়। অথচ জুন মাসের আগে এমনকি গত রমজান মাসেও ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয় প্রতি কেজি পিয়াজ। ভোক্তাদের অভিযোগ, পিয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পরও অন্তত আরো তিন মাস ভারতীয় পেয়াজ বিক্রি হয়েছিল বাজারে। যা ২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত উঠে। অথচ এসব পিয়াজের আমদানি মূল্য ছিল ১০-১২ টাকা কেজি।

নিষেধাজ্ঞার পর মিয়ানমার থেকে ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে পিয়াজ এনেও ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছিল ব্যবসায়ীরা। এরপর মিশর, পাকিস্তান থেকে পিয়াজ আমদানি শুরুর পর তা নেমে আসে ১৫০ টাকায়। দেশি পিয়াজ বাজারে আসার পর তা নেমে আসে ৬০ টাকা কেজি দরে। আমদানি ও বিক্রয়ের এই মূল্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার লোভই পিয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণ। বিশেষ করে পিয়াজের মজুদ গড়ে তোলে সংকট সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ায়। বর্তমানে দেশি পিয়াজের সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। তবুও আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে আবার পিয়াজের মজুদ গড়ে তুলছে ব্যবসায়ীরা। ফলে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিয়াজের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সমপাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পিয়াজের বাজার আগের চেয়ে অনেক কমেছে। তবে সমপ্রতি ভারত পিয়াজ রপ্তানি করবে। এই খবরের পর থেকে ব্যবসায়ীরা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। তাই বাজারে বর্তমানে সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ভারত থেকে পিয়াজ আসা শুরু হলে দামও কমে যাবে।

সুত্র- মানবজমিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *