নাগরিক ডেস্ক : ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে শুক্রবার (১৩ মার্চ) গভীর রাতে বাসার গেট ও ঘরের দরজা ভেঙে ধরে নিয়ে যায় কয়েকজন। তাকে মারধর করতে করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তার পোশাক খুলে দুই চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। পুরো দৃশ্য ভিডিও করা হয়েছে। আর এসব ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার-রাজস্ব) নাজিম উদ্দিন। এমনটাই অভিযোগ করেন তার স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু।
শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম কারাগারে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের সঙ্গে তার স্ত্রী দেখা করতে গেলে তিনি এসব তথ্য জানান। আরিফুল ইসলাম স্ত্রীকে জানান, মধ্যরাতে তাকে বাসা থেকে জোর করে তুলে আনার পথে জেলা প্রশাসক কার্যালয় পর্যন্ত লাথি-থাপ্পড়, ঘুষি মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তার দুই চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। এরপর প্যান্ট ও গেঞ্জি খুলে তাকে উলঙ্গ করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এসব দৃশ্য ভিডিও করা হয় বলে জানিয়েছেন আরিফুল। তিনি আরও জানান, যারা তাকে নির্যাতন করেছে, তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা। তাদের দেখতে না পারলেও তাদের সবার গলার স্বর তার মনে আছে।
মোস্তারিমা সরদার নিতু আরও জানান, ‘আমার স্বামী খুবই অসুস্থ। সে ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছে না। আমাদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলার মতো শক্তি ছিল না তার।’
তিনি আরও জানান, ‘শুক্রবার রাতের অভিযানে আরডিসি নাজিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তাকে চিনতে পেরে সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করি। ওই সময় ওই কর্মকর্তা আমাকে জানান, আমার স্বামী মাদকসেবী, এটা তাদের কাছে প্রমাণ আছে। আমি এর প্রমাণ দাবি করলে তিনি তড়িঘড়ি করে চেয়ার থেকে উঠে চলে যান।’
আরডিসি নাজিম উদ্দিন অভিযানে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি গতরাতে ওয়ার্ক স্টেশনে ছিলাম না।’
জেলা শহরের চড়ুয়াপাড়ায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন আরিফুল। আরিফুল ইসলামকে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের জেলার লুৎফর রহমান। তাকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে।
আরিফুল ইসলামকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করে তার স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে আমাদের বাড়ির গেটে ধাক্কাধাক্কির শব্দ শুরু হয়। আমরা জানতে চাই, কারা ধাক্কাচ্ছে। এসময় বলা হয়, দরজা খুলুন, না হয় ভেঙে ফেলা হবে। এসময় আমার স্বামী কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসিকে ফোন করলে তিনি বলেন, থানা থেকে কোনও পুলিশ সেখানে যায়নি, কারা গেছে বিষয়টি তিনি দেখছেন। এর মধ্যেই তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে। ঢুকেই মারতে শুরু করে আরিফকে। আমার স্বামী ও আমি জানতে চাই আপনারা কারা, কেন মারছেন। এসময় তারা আরিফকে তুই অনেক জ্বালাচ্ছিস−এই কথা বলেই মারধর শুরু করে। মারতে মারতে তাকে নিয়ে যায়। তাকে একটা শার্ট পরারও সময় দেওয়া হয়নি। মাত্র পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যায়। বাসায় কোনও তল্লাশি অভিযানও চালানো হয়নি। অথচ দাবি করা হয়েছে তার কাছে মদ ও গাঁজা পেয়েছে।’
আরিফুলের স্ত্রী জানান, একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ৭/৮ জন সাদা পোশাকধারী তাদের বাসায় প্রবেশ করে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে সাংবাদিক আরিফুলকে মারধর করতে করতে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। এরপর আরিফুল তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে তারা আবারও তাকে মারধর করে। এরপর তাকে নিয়ে সরাসরি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ‘বাড়িতে প্রবেশ করা ৭/৮ জন আনসার বাহিনীর পোশাক পরা ছিল। এছাড়া বাইরে আরও ৪০ থেকে ৫০ জন দাঁড়িয়েছিল। আশপাশের লোকজন যাতে বাইরে বেরুতে না পারে সেজন্য প্রতিটি বাড়ির গেটের সামনে ২/৪ জন করে দাঁড়িয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার সময় বাড়িতে আমার স্বামী, আমি আর আমার দুই শিশু সন্তান ছাড়া আর কেউ ছিল না। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এডিশনাল এসপি ও ওসি সাহেব আমাদের বাসা পরিদর্শন করেছেন। তারা বলেছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।’
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, রাত ২টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আরিফুলের কাছে মাদক পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ এনে রাত আড়াইটার দিকে কুড়িগ্রাম কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘আরিফুল সিগারেট এমনকি পানও খান না। আর তারা বাড়িতে আসলেও শুধু আরিফুলকে ধরে নিয়ে গেছে। তারা তো আমাদের ঘরের ভেতরে সার্চ করেনি বা কোনও কিছু পায়নি। এরপরও কেমন করে তার কাছে মাদক পাওয়া গেছে বলে তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো।’ তিনি বলেন, ‘দেশে কি আইন নেই? এভাবে রাতে বাড়ির গেট ও দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে একজন সংবাদকর্মীকে ধরে নিয়ে যাবে, আমরা কোন দেশে বাস করছি?’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক হিসেবে আরিফ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু খবর করায় তাকে অনেক আগে থেকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। আমার ধারণা, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের সমালোচনা করে সংবাদ প্রকাশের দশ মাস পর শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে ধরে নিয়ে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। রাত সাড়ে বারোটার দিকে ডিসি অফিসের দুই-তিন জন ম্যাজিস্ট্রেট ১৫-১৬ জন আনসার সদস্যকে নিয়ে দরজা ভেঙে তার বাসায় প্রবেশ করেন। তবে তারা কোনও তল্লাশি অভিযান চালাননি। পরে ডিসি অফিসে নেওয়ার পর তারা দাবি করেন, আরিফুলের বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে।
শুক্রবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা এ অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, আনসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানের সময় তার বাড়ি থেকে ৪৫০ এমএল দেশি মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে আরিফুল ইসলাম রিগানকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে দোষ স্বীকার করায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন নিজের নামানুসারে ‘সুলতানা সরোবর’ নামকরণ করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ করেছিলেন আরিফুল ইসলাম। গত বছরের ১৯ মে ‘কাবিখা’র টাকায় পুকুর সংস্কার করে ডিসি’র নামে নামকরণ!’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ হয় বাংলা ট্রিবিউনে। তবে শেষ পর্যন্ত সেই নামকরণ করা হয়নি। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়।
মধ্যরাতে টাস্কফোর্স অভিযানের নামে কাউকে তুলে নিয়ে মোবাইল কোর্টে তার শাস্তি দেওয়া যায় কীভাবে, তার আইনি ব্যাখ্যা দিতে পারেননি কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন। তিনি বলেন, ‘আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে গ্যাপ থাকলে দেখা হবে।’
সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘টাস্কফোর্সের অভিযান ছিল। এটা ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালনা করেছে রেগুলার শিডিউলের অধীনে। সঙ্গে মাদকদ্রব্য অধিদফতরের লোক, পুলিশ, আনসার ছিল।’
টাস্কফোর্সের অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্ট আইনে সাজা দেওয়া ঠিক আছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইনের মধ্যে হয়েছে। তারা সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে আপিল করবে, দেখবো আমরা।’
একটি পুকুর নিজের নামে নামকরণ করা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা তো এক বছর আগের ঘটনা। আর রিপোর্টটিও মিথ্যা। এরকম কিছু হলে তো তখনই হতো। আর এই রিপোর্টের জন্য তো সে স্যরি বলেছে। আমরা ভিনডিকটিভ (প্রতিহিংসাপরায়ণ) না।’
এ ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে রাতে দরজা ভেঙে মোবাইল কোর্ট ঘরে ঢুকতে পারে কিনা তা নিয়ে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসান এমএস আজিম বলেন, রাতে পুলিশ যেতে পারে তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এভাবে যেতে পারেন না।
আইনজীবী হাসান এমএস আজিম বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনে সাজা প্রদানের বিষয়ে কোনও সময়ের উল্লেখ নেই। তবে এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তো আর রাতের বেলা পরিচালনা করতে পারেন না। রাতের বেলা পুলিশ যেতে পারে। আদালত রাতে যেতে পারেন না। এমনকি ঘরের দরজা ভেঙেও ঢুকতে পারেন না। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত চাইলে সিলগালা করে দিয়ে আসতে পারেন। পরে আইন প্রনয়ণকারী সংস্থা গিয়ে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘর ভেঙে ঢুকবে তাও আবার রিপোর্ট প্রকাশকে কেন্দ্র করে। এটা তো কাকতালীয় কোনও ঘটনা না। এখানে রিপোর্ট প্রকাশের সঙ্গে ডিসির সাজা প্রদানের বিষয়ে কোনও যোগসূত্র থাকতেই পারে, সে সম্ভাবনা আমি দেখছি। সার্বিকভাবে এমন ঘটনা আইনের বিধিবিধানের সুস্পষ্ট পরিপন্থী।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্ধেক বোতল মদ এবং দেড়শ গ্রাম গাঁজার জন্য যে একবছরের সাজা দেওয়া হয়েছে এটাই যথাযুক্ত হয়নি বলে মনে করি। এ ধরনের সাজা প্রদান কখনোই পেশাদারিত্ব নয় বরং উচ্চ মাত্রার অপেশাদারিত্ব।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাসান আজিম আরও বলেন, ‘আইনত যেখানে অপরাধীকে পাওয়া যাবে সেখানেই সাজা দিতে হয়। কিন্তু বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে যদি ডিসি অফিসে সাজা দেওয়া হয় তাহলে তা অবৈধ হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচার মানে তাৎক্ষণিক অপরাধের স্থানেই বিচার দিতে হয়। হাইকোর্টের বেশ কিছু মামলায় এমন অসংখ্য নজির রয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। সংগঠন দুটি বলেছে, ‘কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে বাসভবন থেকে একটি মহল তুলে নিয়ে যাওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে।’
শনিবার (১৪ মার্চ ২০২০) বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নেতারা এ ধরনের অপচেষ্টাকারীদের সতর্ক করে দিয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দাবি করেন। তা না হলে চিহ্নিত এ মহলের মুখোশ উন্মোচনে কঠোর আন্দোলন করা হবে বলেন তারা।
এদিকে মধ্যরাতে মাদকবিরোধী টাস্কফোর্সের অভিযানে আরিফুল ইসলামকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব ও একজন যুগ্ম সচিব জানান, ‘কুড়িগ্রামের বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর। কোনোভাবেই মধ্যরাতে টাস্কফোর্সের অভিযান আইনসম্মত নয়। অবশ্যই টাস্কফোর্সকে সকাল না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, তাই বিধান রয়েছে। মধ্যরাতে অভিযান ও সাজা দেওয়ার বিষয়টি প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মাঠপর্যায়ে সরকার ও প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা কমায় এবং পরিস্থিতি বিরূপ করে তোলে।’
তারা উভয়েই জানান, যেহেতু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই বিষয়ে অবগত ও বিব্রত, তাই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘কুড়িগ্রামে বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের ওপর যদি অন্যায় হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই জেলা প্রশাসককে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমি এখনি খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
তাকে পুরো ঘটনা বলার পর সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাইলে শনিবার দুপুরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম, আমি বিষয়টা জানতাম না। এখনি এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট ও সাজা কোনও কিছুই আইনসম্মত নয়। ডিসি বলেই সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, সাধারণভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত এভাবে পরিচালনা করা যায় না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, মধ্যরাতে কারও বাড়ির দরজা ভেঙে প্রবেশ করার এখতিয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়। এর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ওই ঘটনার বিষয়ে এখনও অবগত নই। তবে সেখানে আইনের কোনও ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না, তবে আপনার মাধ্যমে বিষয়টি শুনলাম। আপনারা সবসময়ই আমাকে প্রশ্ন করেন। তবে এ প্রশ্নটা জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে জিজ্ঞাস করুন।’
সুত্র- পূর্বপশ্চিম